দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে ১০ আইনজীবীর রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, শরীফ উদ্দিন নিজেই আরেকটি রিট করায় আদালত আমাদের রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন।
দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি করা হয়। ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রিটটি দাখিল করেন। রিটকারী ১০ আইনজীবী হলেনÑ মোহাম্মদ শিশির মনির, রেজওয়ানা ফেরদৌস, জামিলুর রহমান খান, উত্তম কুমার বণিক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. তারেকুল ইসলাম, মীর ওসমান বিন নাসিম, সৈয়দ মোহাম্মদ রায়হান, মো. সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নওয়াব আলী।
দুদক উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়টি গত ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী শিশির মনির। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। দুদকের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকাউল স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। বিভ্রান্তি দূর করতে শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ বিষয়ে দুদক সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের কারণ হিসেবে অনিয়ম দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার ১৩ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরেন দুদক সচিব জানায়।
মো. শরীফ উদ্দিন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ে কর্মরত থাকাকালে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন এসেছে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে অনেক ভুক্তভোগী দুদকে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি দুদক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন মামলায় শরীফ উদ্দিনের তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে ইতিবাচক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে অনেক গণমাধ্যম।
চাকরি অপসারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২)তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি অনুযায়ী ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা (যদি থাকে) পাবেন। কমিশনের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়।