শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪ by

জার্মানির স্থল সীমান্তে কড়া নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা

অবৈধ অনুপ্রবেশ কমাতে জার্মান সরকার স্থল সীমান্তে কড়া পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। সীমান্ত থেকেই আরো শরণার্থী ফেরত পাঠাতে চায় সে দেশের সরকার। কিন্তু এমন উদ্যোগের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে জার্মানির জোট সরকার যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে না-এমন অভিযোগ বেশ কিছুকাল ধরে শোনা যাচ্ছে। চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ সেই লক্ষ্যে কড়া পদক্ষেপের ঘোষণা দিলেও নিন্দুকদের মতে, বাস্তবে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সরকার অবশ্য পরিসংখ্যান দেখিয়ে দাবি করছে, চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই অভিবাসন ২১ শতাংশের বেশি কমে গেছে। কিন্তু জোলিঙেন শহরে অবৈধ আশ্রয়প্রার্থীর ছুরি চালানোর ঘটনা এবং তার ঠিক পর পূর্বাঞ্চলীয় দুই রাজ্যে চরম দক্ষিণপন্থী এএফডি দলের অভাবনীয় সাফল্যের পর শোলজের সরকার একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রথমে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত একদল অবৈধ শরণার্থীকে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এবার জার্মানির সব স্থলসীমান্তে আরো কড়া নিয়ন্ত্রণ চালু করার ঘোষণা দিলেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার বলেন, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আপাতত ছয় মাসের জন্য জার্মানির স্থলসীমান্তে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মুক্ত সীমানার শেঙেন এলাকার সদস্য হওয়া সত্ত্বেও জার্মানি এমন পদক্ষেপ নেবে। ফেজার বলেন, বিশেষ এক উদ্যোগের আওতায় কর্তৃপক্ষ সরাসরি সীমান্তেই আরো বেশি শরণার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা পাবে। তবে সেই উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত জানানি। তিনি আরো বলেন, ইউরোপীয় কমিশন ও প্রতিবেশী দেশগুলোকে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানানো হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে উগ্র ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং সীমান্তে অপরাধমূলক সংগঠনগুলোকেও দমন করতে চায় সরকার। অবৈধ অনুপ্রেবেশের প্রশ্নে কোণঠাসা শোলজের সরকার চরম দক্ষিণপন্থী এএফডি দল ও নতুন বাম রক্ষণশীল বিএসডাব্লিউ দলের সাফল্যের মুখে সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা কমাতে বাড়তি তৎপরতা দেখাচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের জনপ্রিয়তাও সরকারের মাথাব্যথার কারণ। সরকারি জোটের শরিক দলগুলো দুই সপ্তাহ পর পূর্বাঞ্চলীয় ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে নির্বাচনে অবৈধ অভিবাসনে রাশ টানতে নতুন সব পদক্ষেপের সুফল পায় কি না, সে বিষয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। উল্লেখ্য, আগামী বছর জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এদিকে অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে জার্মানির একক পদক্ষেপ ইউরোপীয় স্তরে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিশেষ করে মুক্ত সীমানার শেঙেন এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য নিয়ন্ত্রণ চালু রাখা কঠিন হতে পারে। একমাত্র অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ওপর হুমকি দেখা দিলে শেঙেন এলাকার দেশগুলো চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে সীমান্তে সাময়িক নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেয়ারহার্ড কামের জার্মানির ‘বিল্ড’ সংবাদপত্রকে সোমবার জানিয়েছেন, তার দেশ জার্মান সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানো কোনো শরণার্থীকে গ্রহণ করবে না।

About The Author

শেয়ার করুন