Last Updated on সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪ by
আগামী নির্বাচনে জনগণ যে দলকে ভোট দেবে তারাই দেশ পরিচালনা করবে : হারুনুর রশীদ
গণ আন্দোলনে নিহত ও আহত ছাত্র জনতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, অবিলম্বে গণহত্যা, দুর্নীতিবাজ, গণতন্ত্রের শত্রুদের বিচার এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কার ও যৌক্তিক সময়ে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবিতে বিশাল সমাবেশ চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা পার্কে সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিকেল তিনটার দিক থেকে রং বেরংয়ের টুপি মাথায় আর সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের ফটো সংবলিত টিশার্ট পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে পৌর পার্কে সমবেত হন। স্লোগানে স্লোগানে মুখোরিত হয়ে ওঠে বিকেলের শহরে। নারীরাও আসেন সমাবেশে। কানায় কানায় ভরে যায় পৌরপার্ক। সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বক্তব্যের মধ্যেই সমাবেশ মঞ্চে এসে উপস্থিত হন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সমাবেশের প্রধান অতিথি সাবেক এমপি হারুনুর রশীদ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কড়া সমালোচনা করে এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হারুনুর রশীদ তার বক্তব্যে বলেন-গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের অথনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ সকল সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে তারা। মানুষের কথা বলার অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল, গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছিল।
তিনি বলেন-গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এই সরকারের কাছে মানুষের চাওয়া অনেক। কারণ গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রীয় কাঠামোগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। সেইসব কাঠামোগুলোকে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য কামনা করে হারুন বলেন, আমরা চাই বিধ্বস্ত অর্থনীতি, বিধ্বস্ত রাষ্ট্রীয় কাঠামোগুলোকে পুনর্নির্মাণ করে জনগণের আশাআকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়ে যৌক্তিক সময়েই জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। তিনি দাবি করে বলেন- ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং নতুন স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদেরকে শহিদি মর্যাদা দিতে হবে, জনবান্ধব পুলিশ তৈরি করতে হবে। গত ১৫ বছরে যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে যারা রাষ্ট্রীয় কাঠামোগুলোকে ধ্বংস করেছে, গুম খুন হামলা মামলা দিয়ে যারা আমাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল তাদেরকে কী আমরা মাফ করতে পারি? না পারিনা, তাদের বিচার হতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকবে না।
হারুনুর রশীদ বলেন-পুলিশ বাহিনীর সবাই দোষী নয়-তবে যারা দোষী, যারা মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। পুলিশের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন-আগামীদিনে পুলিশ ন্যায়ের পথে থাকবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন-আপনারা ভালো কাজ করেন আমরা আপনাদের সহযোগিতা করব।
তিনি বলেন-বিএনপি পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়না, নির্বাচনের মাধ্যমে যেতে চায়। বাংলাদেশের জনগণ যাকে ম্যান্ডেট দেবে তারাই দেশ পরিচালনা করবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। হারুন বলেন-বিগত সময়ে সংবাদ মাধ্যমের গলা টিপা ছিল। ফলে সংবাদ কর্মীরা সঠিত তথ্য তুলে ধরতে পারেন নি। এখন সময় এসেছে, সমাজের অন্যায় অবিচারগুলোকে সঠিকভাবে তুলে ধরবেন, প্রয়োজনে আমাদের ভুলত্রুটিগুলো তুলে ধরবেন। এসময় তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উন্নয়নের জন্য তার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। হারুনুর রশীদ বলেন-চাঁপাইনবাবগঞ্জ হচ্ছে বিএনপির দুর্গ। এখানে কেউ যদি বিএনপির নাম করে চাঁদাবাজী করে তাহলে তাকে বা তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
কৃষক দলের আহবায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম তসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা শামসুল হক, জেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক নজরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বারেক, কৃষক দলের উপজেলা সভাপতি আকম সাহিদুল আলম বিশ্বাস পলাশ, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান অনু, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর কবির, তাসেম আলী, রানীহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রহমত আলী, সাবেক ছাত্রনেতা সামিরুল ইসলাম পলাশ, মিম ফজলে আজিম, হামিদুর রহমানসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।