শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on মে ৩০, ২০২৪ by

জনগণ ও দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ আন্তরিকভাবে নিবেদিত : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণ ও দেশের উন্নয়নে সর্বদা আন্তরিকভাবে নিবেদিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে আছি, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করব।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন আয়োজিত কলাপাড়ায় সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এইসব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ‘অনেক লোকই তো ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু তারা এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য কিছুই করেনি।’
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দেশে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রকৃতির নিয়মেই আসে। সেখানে মানুষের জীবনমান বাঁচানোই সবচেয়ে বড় কথা। জিনিস গেলে পাওয়া যায়, কিন্তু জীবন তো আর পাওয়া যায় না।
তিনি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারো জনগণের সেবা করার সুযোগ প্রদানে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আজ দেশে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছি। মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হচ্ছে। আমরা রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ নির্মাণ করে আপনাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা সব করে দিয়েছি। এখন ৬/৭ ঘণ্টার মধ্যেই সড়কপথে কলাপাড়া আসা যায়।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে এবারে খুবই অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাস হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষ তাদের করে দেওয়া সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় পেয়েছে।
তিনি দুর্যোগসহনীয় ঘরবাড়ি দরিদ্রদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন। যে কারণে মানুষ ও পশু-পাখি আশ্রয়ের জায়গা পেয়েছে। তার সরকার চায় এই এলাকার মানুষ যেন দুর্যোগ থেকে মুক্তি পায়; কারণ এই এলাকা সবসময়ই দুর্যোগপ্রবণ।
শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভেঙে যাওয়া বাঁধ নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। যাতে বর্ষার আগেই এগুলো পুনঃনির্মাণ করে মানুষকে জলোচ্ছ্বাস বা পানির হাত থেকে বাঁচাতে পারা যায় সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি তিনি প্রশাসনের সঙ্গে বসে হিসাব নিরূপণ করে যেখানে যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে সেগুলোও সংস্কারের পদক্ষেপ তিনি নেবেন এবং ধানকাটা শেষ হয়ে গেলেও তরিতরকারি ও খেতের ফসল যা নষ্ট হয়েছে, কৃষকরা যেন নতুন উদ্যমে আবার চাষাবাদ করতে পারেন সে জন্য বীজ ও সার প্রদানসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেয়ার আশ^াস দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ, মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য যা যা দরকার আওয়ামী লীগ সরকার সেটা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ যেন না খেতে পেয়ে কষ্ট না পায় এইজন্য তাদের সার্বিক উন্নতিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
কলাপাড়া আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নির্মল নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেনÑ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন।
এর আগে এই এলাকার ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এই অঞ্চলে সেনানিবাস ও নৌবাহিনী ঘাঁটি, পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে বলেই এই এলাকার সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এর আগে অনেকে সরকারে থাকলেও কেউ এদিকে দৃষ্টি দেয়নি।
তিনি বলেন, এই অঞ্চল অবহেলিত ছিল। এই অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে। প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে লিপ্ত হয়।
সরকারপ্রধান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে কিন্তু সেটাকে মোকাবিলা করে মানুষের জীবনমান রক্ষা করাই তার সরকারের লক্ষ্য এবং সেই কাজই তারা করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বাবা-মা-ভাই সব হারিয়ে নিঃস্ব-রিক্ত তিনি জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কারণ, তার বাবা এই দেশের মানুষের জন্যই সারাজীবন কষ্ট করেছেন। এই দেশের জনগণের ভাগ্য তিনি পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। আজ তারা বাংলাদেশ ডিজিটাল করেছেন আগামীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ‘উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবেন।
যুবসমাজের মধ্যে উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে তাদের জন্য বিনা জামানতে ঋণ প্রদান, স্টার্টআপ প্রোগ্রাম, ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেকারের সংখ্যা এখন মাত্র ৩ ভাগ। ইনশআল্লাহ সেটাও থাকবে না। তবে, নিজেকে উদ্যোক্তা হতে হবে এবং কেবল চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের উদ্যোগ নিতে হবে।

About The Author

শেয়ার করুন