প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে গড়ে তুলতে হয় তাহলে সত্যিকারভাবে তার আদর্শ বুকে ধারণ করে তার মতো ত্যাগী কর্মী হিসেবে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার বিকেলে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতির পিতার ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
জাতির পিতা তার সারাটি জীবন কষ্ট সহ্য করেছেন এমনকি তার জীবনটি পর্যন্ত মানুষের জন্য দিয়ে গেছেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা জনগণকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। আমাদের কথা কিন্তু বলেননি। বলেছেন বাংলার সাধারণ মানুষের কথা। কাজেই তিনি যাদের ভালোবাসতেন তাদের কল্যাণ করা সন্তান হিসেবে আমি এটাকে দায়িত্ব বলে মনে করি। এ বিষয়টি মুজিব আদর্শের সৈনিক ছাত্রলীগের নেতাকর্মী প্রত্যেকেরও দায়িত্ব বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজকে আমাদের এটাই প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, জাতির পিতা এদেশের মানুষের কল্যাণে তার সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন সেই মানুষের কল্যাণে কতটুকু আমরা কাজ করতে পারলাম, সেই হিসেবটাই আমাদের করতে হবে। কতটুকু আমরা দিতে পারলাম- সেটাই হবে একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য সবচেয়ে বড় সার্থকতা।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগ আমার বাবার হাতে গড়া। আমিও একদিন ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম। সেই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবেই আমার রাজনীতির হাতেখড়ি। সেখান থেকেই আমার যাত্রা। তিনি বলেন, ‘কাজেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এইটুকুই বলব চাওয়া পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে আদর্শের সাথে নিজেকে গড়ে তুলবে। দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যাবে, যেন জাতির পিতার আত্মা শান্তি পায়।’
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের নিয়মিত প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’ এবং ছাত্রলীগের মাসিক পত্রিকা ‘জয় বাংলা’র মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে জাতিগঠনে ছাত্রলীগের ভূমিকা নিয়ে একটি ৩ মিনিটের ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদি হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক মোজোবাইর হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হƒদয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিব চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেইন আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সভায় সভাপত্বি করেন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী সভা পরিচালনা করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।