চীনের একটি স্কুলে নারী ভলিবল টিমের ওপর ব্যায়ামাগারের কংক্রিটের ছাঁদ ধসে পড়ে ১১ জন নিহত হয়েছে। দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় হেইলংজিং প্রদেশের চিচিহার শহরে স্থানীয় সময় রোববার দুপুর ২টা ৫৬ মিনিটের দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে প্রাদেশিক দমকল বিভাগ জানিয়েছে, খবর সিনহুয়ার। নগরীর লংশা এলাকার ৩৪ নং মাধ্যমিক স্কুলের নারী ভলিবল টিম তখন ওই ব্যায়ামাগারটি ব্যবহার করছিল। ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৫ জন চাপা পড়ে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে শেষ জনকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়, এই শিক্ষার্থীর মধ্যে বেঁচে থাকার কোনো লক্ষণ ছিল না বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় ব্যায়ামাগারটিত মোট ১৯ জন ছিল, এদের মধ্যে চারজন সেখানে থেকে বের হয়ে যেতে পেরেছেন। এই চারজনসহ দুর্ঘটনার পর মোট ৮ জন বেঁচে আছেন। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, নির্মাণ শ্রমিকরা ব্যায়ামাগারটি ছাদে অবৈধভাবে পার্লাইট নামের এক ধরনের খনিজ কাঁচ স্তূপ করে রেখে দিয়েছিলেন, এই পদার্থটি পানি শোষণ করতে পারে। টানা বৃষ্টির মধ্যে ভিজে এগুলো আরও ভারী হয়ে পড়ায় একপর্যায়ে ছাদটি ধসে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নিহতদের অনেকেই শিশু। তবে কর্তৃপক্ষ এখনও তা নিশ্চিত করেনি। চায়না ইয়থ ডেইলিকে এক পিতা জানিয়েছেন, স্কুলের নারী ভলিবল টিম ওই ব্যায়ামাগারটিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল।
তিনি তার ১৬ বছর বয়সী কন্যার খবর জানার জন্য হাসপাতালে উদ্বিগ্ন হয়ে বসেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী একজন চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিওকে বলেন, “বিভিন্ন গ্রেডের শিক্ষার্থীদের নিয়ে টিমটি তৈরি করা হয়েছিল। শহরের বাইরে একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার পর তারা মাত্র কয়েকদিন আগে স্কুলে ফিরেছিল।” হতাহতদের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক কেউ আছেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে গত রোববার রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিওর খবরে দলটির কোচও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন বলে জানানো হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাস্থলের উপর থেকে তোলা একটি ছবিতে পুরোপুরি ধসে পড়া একটি ছাঁদ দেখা গেছে। সেখানে কংক্রিটের বড় বড় টুকরার পাশে পাশে উদ্ধারকারীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। অন্যান্য ছবিতে স্কুলের ভবনের পাশে বিশাল সব ক্রেন স্থাপন করে উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে, এমনটি দেখা গেছে। এই এলাকাসহ চীনের কয়েকটি অংশে শনিবার ও রোববার ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে, এতে কিছু এলাকায় বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।