রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫ by

চার দিন ধরে ভূমিকম্পে কাঁপছে গ্রিসের সান্তোরিনি দ্বীপ

গ্রিসের সান্তোরিনি দ্বীপে সোমবার চতুর্থ দিনের মতো বহু ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় দ্বীপটি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ফেরির পাশাপাশি অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত শুক্রবার থেকে এজিয়ান সাগরের আগ্নেয় দ্বীপ সান্তোরিনি ও আমোরগোসে একাধিক ভূকম্পন রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে, কর্তৃপক্ষ সান্তোরিনি এবং আশপাশের আইওস, আমোরগোস ও আনাফি দ্বীপের স্কুলগুলো আগামী শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। গত সোমবার প্রতি কয়েক মিনিট অন্তর সান্তোরিনিতে কয়েকটি ৪ মাত্রার ওপরেসহ ভূমিকম্প অনুভূত হতে থাকে। এ কারণে লোকজনকে ঘরের ভেতরে না থাকার এবং ছোট বন্দরগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। সতর্কতা হিসেবে দুর্যোগ মোকাবিলা ইউনিটগুলোকে মোতায়েন করে প্রস্তুত রাখা হয়। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দ্বীপটির ভূকম্পনজনিত সক্রিয়তা আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে অব্যাহত থাকতে পারে, যার সবচেয়ে জনবহুল এলাকাগুলোর কিছু অংশ খাড়া পাহাড়ের উপর অবস্থিত। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায়ই ভূমিকম্প হওয়ার কারণে অভ্যস্ত স্থানীয় বাসিন্দারা তেমন আতঙ্কিত নন, তবে পর্যটকরা ও কাজের উদ্দেশে দ্বীপটিতে থাকা অনেকেই নিরাপত্তার কথা ভেবে সান্তোরিনি ছেড়ে যাচ্ছেন। এই দ্বীপটি গ্রিসের একটি জনপ্রিয় পর্যটনক গন্তব্য।”তিন দিন ধরে প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর ভূমিকম্প হচ্ছে, থামছেই না, পুরো দ্বীপের সবাই আতঙ্কিত হয়ে আছে,” বলেন তাজানিস লিগনোস (৩৫) । তিনি তার নিজের জন্য এবং স্ত্রী ও ছেলের জন্য দ্বীপ ছাড়ার টিকিট সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন।”গত রাতে কেউ ঘুমাতে পারেনি, আমার স্ত্রীও না। অনেক শোরগোল হচ্ছিল, আমরা আতঙ্কে দৌড়ে বাইরে বের হয়ে গিয়েছিলাম। এই অবস্থায় আমরা আর এখানে থাকতে পারছি না,” বলেন তিনি। রয়টার্স লিখেছে, দ্বীপ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন এমন বহু মানুষকে সোমবার ফেরিতে ওঠার জন্য দ্রুত বন্দরের দিকে যেতে দেখা গেছে। জোই লিগনু (৭২) বলেন, “অনবরত ভূমিকম্প হচ্ছে। এটি তীব্র। তিন দিন ধরে সহ্য করেছি, কিন্তু আজকের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যত দিনই লাগুক, দ্বীপ ছেড়ে যাব।” গ্রিসের বেসামরিক সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এজিয়ান এয়ারলাইন্স বাসিন্দাদের ও পর্যটকদের দ্বীপ ছাড়ার সুবিধার্থে সোম ও মঙ্গলবার সান্তোরিনি থেকে তিনটি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছে। টেকটোনিক ভূতত্ত্ব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এবং ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি মূল্যায়নকারী বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য এফথেমিওস লেকাস গ্রিক টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, “আমরা ধারণা করছি, ভূমিকম্পের এ ধারা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।” গ্রিস একাধিক ফল্ট লাইনের উপরে অবস্থিত আর এখানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। দেশটির জন্য এটি একটি স্বাভাবিক দুর্যোগ পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচিত। প্রায় ১৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম অগ্ন্যুৎপাতে সান্তোরিনি দ্বীপটি বর্তমান আকারে গঠিত হয়েছিল। এই এলাকায় সর্বশেষ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল ১৯৫০ সালে।

About The Author

শেয়ার করুন