চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পাচ্ছেন যারা

102
আজিজুর রহমান শিশির
নাট্যকলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাট্যাঙ্গনে দীর্ঘদিনের নাট্যশিল্পী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আজিজুর রহমান শিশির, জন্ম ১৯৫৯ সালে; চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের ছোট চকঘোড়াপাখিয়া গ্রামে। ৬ ভাই, ২ বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ।
শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটি এলাকার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক অবদানও রেখেছিলেন একসময়। এজন্য মানসিক নিপীড়নও কম সইতে হয়নি তাঁকে। সেসবকে উপেক্ষা করে নিজের কাজটাকে শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করেছেন আজিজুর রহমান শিশির।
ছোট থেকেই ছিল গান-বাজনাসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রচণ্ড শখ। সে শখকে এখনো সযত্নে  লালন করে চলেন। তবে ছেলেবেলার শখের বাস্তবায়ন ঘটেছিল অনেকটা পরে, বয়স বিশের কোঠা পেরোনোর পর। একটানা প্রায় ১৫ বছর নিয়মিত সাংস্কৃতিক চর্চা চালিয়ে গেছেন। কবিতা, গান, নাটক, যাত্রা- সব জায়গায় রেখেছেন সফলতার ছাপ। অভিনয় করে মঞ্চ কাঁপিয়েছেন, পুরস্কৃতও হয়েছেন। ছিলেন নির্দেশকও। তিনি একটি নাটক লিখে মঞ্চায়নও করেন।
সংস্কৃতিমনস্ক মানুষটি একসময় অর্থনৈতিক টানাপোড়ন থেকে মুক্তি পেতে হয়ে পড়েন পেশাদার সাংবাদিক, এখনো তাই। বয়স শরীরকে কিছুটা কাবু করলেও মনটা এখনো সেইরকম টনটনে, সাংস্কৃতিক চর্চায়। সুযোগ পেলেই দুই লাইন গান কিংবা কবিতা শোনাতে ভুল করেন না, পেশাগত দায়িত্ব পালনের ফাঁকে। তার দরাজ কণ্ঠের আবৃত্তি শুনলে যে কেউই মোহাবিষ্ট হবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত শিল্পী ঝড়– পালের ছেলে মিলন পালের পরামর্শে ১৯৮২ সালে অন্যদের নিয়ে রানীহাটিতে গড়ে তুলেন ‘রংতুলি খেলাঘর আসর’। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সাংস্কৃতিক চর্চা শুরু হয় আবেগ আর ভালোবাসার জায়গা থেকে। ‘রংতুলি’র আয়োজনে শুরু হয় ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস, মহান স্বাধীনতা দিবস, মহান বিজয় দিবস, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী, পহেলা বৈশাখ ও মে দিবস পালন। ছোট্ট এলাকা হিসেবে রানীহাটির সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সেই সময় অনেকটাই আলোড়ন তুলেছিল।
আজিজুর রহমান শিশির বন্ধুসহ অন্যদের সঙ্গে নিয়ে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে। রংতুলির পক্ষ থেকে শিশুদের সংগীত, আবৃত্তি, নাটকে অভিনয় শেখানোর পাশাপাশি খেলাধুলার চর্চাও করা হতো সেই সময়। শুধু তাই নয়, এসব চর্চার কারণে শিশুরা যাতে পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে না পড়ে, তার জন্য বাসায় গিয়ে ওইসব শিশুদের লেখাপড়াও করাতেন। অভিনয় করেছেন প্রায় গোটা বিশেক নাটকে। এর মধ্যে গোলাম রাব্বানী তোতার লেখা ‘আমরা বাঁচতে চাই’, অরবিন্দ ঘোষের লেখা ‘পলাশ ফিরে এসো’, মুনির চৌধুরীর ‘কবর’, মমতাজ উদ্দীন আহমদের ‘বর্ণ চোর’ নাটক, মনোজ মিত্রের ‘নৈশভোজ’ উল্লেখযোগ্য।
আজিজুর রহমান শিশির ‘ফিক্সড’ অভিনেতা ছিলেন না। বহু নাটকেই ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে হাজার হাজার দর্শক-শ্রোতার ভালোবাসা কুড়িয়েছেন। ওই সময়ে তাদের পরিবেশিত সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শুধুই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলা হতো। গানগুলোও থাকত দেশাত্মবোধক। প্রচারবিমুখ শিশির রংতুলি খেলাঘর চালাতে গিয়ে প্রয়োজনের তাগিদে তবলা বাজানও মোটামুটি শিখেছিলেন।
এসব কিছু ছাপিয়ে আরেকটি নেশা ছিল তাঁর। তা হলো যাত্রা। আয়োজন কিংবা অভিনয়- দুটোতেই ছিল চরম আকাক্সক্ষা। রংতুলি খেলাঘর আসরের বাইরে এলাকার বন্ধুদের নিয়ে প্রতিবছর শীতের সময় যাত্রাপালার মঞ্চায়ন হতো। সম্ভবত ১৯৮৫ সালে বন্ধু জহিরুল করিম ডেভিডের নির্দেশনায় ‘একটি পয়সা’ নামের একটি যাত্রাপালায় পাগলের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মুহুর্মূহু করতালিতে ধন্য হয়েছিল তাঁর অভিনয় জীবন। এরপর থেকে প্রতি বছর কোনো না কোনো যাত্রাপালায় অভিনয় লেগেই থাকত। বেশ কয়েকটি যাত্রা আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর মধ্যে ১০-১২টি যাত্রাপালায় অভিনয়ও করেছেন।
যাত্রা মানেই যে অশ্লীলতা নয়, প্রমাণ করেছিলেন। অশ্লীলতা এড়াতে রানীহাটি সিনেমা হলে যাত্রাপালার আয়োজনও করেছিলেন। সেই সময় মা-বাবা, ভাই-বোনসহ অনেক পরিবারই তাদের পরিবেশিত যাত্রাপালা উপভোগ করেন। যাত্রার নাম ছিল ‘জীবন নদীর তীরে’। সে যাত্রায় পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেন তিনি। ভালো অভিনয়ের জন্য পুরস্কারও পান। ছত্রাজিতপুর আলাবক্স মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের তৎকালীন প্রভাষক (বর্তমানে প্রয়াত) মোসাদ্দেক হাদির পরামর্শে, প্রতিযোগিতার নিমিত্তে মূল নির্দেশনায় রংতুলি খেলাঘর আসর মনোজ মিত্রের ‘নৈশভোজ’ নাটকটি মঞ্চস্থ করার জন্য নির্বাচন করে এবং মঞ্চস্থ হলে ব্যাপক দর্শক নন্দিত হয়।

লুৎফর রহমান সরকার
লোকসংস্কৃতি [আলকাপ গান]

মো. লুৎফর রহমান সরকার ১৯৫৯ সালের ১১ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার অন্তর্গত পলাশবোনা গ্রামে পৈতৃক ভিটায় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রয়াত শামসুদ্দীন এবং মাতা প্রয়াত ঝপেরজান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার সবচেয়ে রঙ্গরসে ভরপুর লোকসংগীত হলো ঐতিহ্যবাহী ‘আলকাপ গান’। আলকাপ গানের প্রধান চরিত্রটিকে বলা হয় সরকার। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আলকাপ গানের যে কয়জন স্বনামধন্য সরকারকে এখনো মঞ্চে দেখা যায়, তাদের মধ্যে অন্যতম বয়জ্যেষ্ঠ ও জনপ্রিয় সরকার চারণকবি মো. লুৎফর রহমান সরকার। তাঁর অভিনয় ও সংগীতজীবন শুরু যাত্রাদলের নায়ক দাসু’র উৎসাহ ও সহযোগিতায়। অতঃপর ভোলাহাট উপজেলার সম্পদশালী ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি বাদু মিয়ার আলকাপ দলে যোগদান করে আলকাপ গান চর্চা ও পরিবেশন আরম্ভ করেন।
তিনি ১৫ বছর বয়স থেকেই আলকাপ গান রচনা, আলকাপ গানের আসর, বন্দনা, ফার্স, কীর্তনসহ বিভিন্ন গান রচনা করে থাকেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর আলকাপ গানের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। বর্ষাকাল ব্যতীত বছরের সারাটা সময় তিনি পরিবেশন করেন আলকাপ গান। সমগ্র দেশে প্রায় দুই হাজারের অধিক মঞ্চে আলকাপ গান পরিবেশন করে খ্যাতি লাভ করেছেন।
লুৎফর রহমান শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ, গোমস্তাপুর উপজেলা শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য। আলকাপ গান ছাড়াও সারিগান, বৈঠকিগান, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, শেখ রাসেল এবং সামাজিক সচেতনতামূলক অসংখ্য গানের রচনা ও সুর করে সুনাম অর্জন করেছেন তিনি।
লুৎফর রহমান সরকার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আদি লোকসংস্কৃতি আলকাপ গানের শিল্পী হিসেবে লোক সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন। তাঁর অনেক ছাত্র-ছাত্রী আলকাপ গানের শিল্পী হিসেবে সমাদৃত ও প্রশংসিত হয়েছেন। এদের মধ্যে শ্রী হরেন বাবু, মো. আওয়াল, রিপন, নুরুল, মাইনুল তাদের মধ্যে অন্যতম।

হাফিজুর রহমান কাজল
কণ্ঠসংগীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রথিতযশা কণ্ঠশিল্পী উজ্জ্বল নক্ষত্র হাফিজুর রহমান কাজল ১৯৬৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার রাজারামপুর (গোরস্থান পাড়া) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রয়াত মোস্তাফিজুর রহমান এবং মাতা মোসা. নাসিমা বেগম।
স্কুলজীবন থেকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন শুরু করেন হাফিজুর রহমান। বাদ্যযন্ত্রের সাথে প্রথম হাতেখড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংগীতা সংগীত নিকেতনের স্বপ্নীল পলাশ আলমগীরের কাছে। পরবর্তীতে ওস্তাদ রফিকুল ইসলাম বাবু, গোলাম মোস্তফা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির ওস্তাদ মেহবুব রাজা, ওস্তাদ নাজিমুদ্দীন নাজু এবং রাজশাহী সুরবাণী সংগীত বিদ্যালয়ের ওস্তাদ প্রয়াত আব্দুল আজিজ বাচ্চুর কাছ থেকে সংগীতে তালিম গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত উচ্চাঙ্গ ও সাধারণ সংগীত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন একাধিকবার।
উপজেলা ও জেলাপর্যায়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অর্জন করেন শিক্ষাজীবনে। তিনি নিয়মিতভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সপ্তসুর সংগীত নিকেতন এবং সংগীতা সংগীত নিকেতনের শিল্পী হিসেবে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে সংগীত পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি ১৯৮৬ থেকে অধ্যবধি বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর আধুনিক ও লোকসংগীতে প্রথম গ্রেডের শিল্পী হিসেবে নিয়মিত সংগীত পরিবেশন করে আসছেন।
১৯৮৬ সালে শিল্প গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেন ‘সপ্তসুর সংগীত নিকেতন’ নামে। ‘সপ্তসুর সংগীত নিকেতন’র প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যবধি পরিচালক ও সংগীত প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

শ্রী হিরালাল কোল কর্মকার
যন্ত্রশিল্পী [মাদল]

শ্রী হিরালাল কোল কর্মকার ১৯৬৯ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের চট্টিগ্রাম (বাবুডাইং) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা শ্রী শাওনা কোল কর্মকার এবং মাতা শ্রীমতি মাবিয়া রাণী।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবারে জন্ম হওয়ায় শৈশবে তাঁর সংস্কৃতির প্রতি বেশ ঝোঁক ছিল। তাই তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করতেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অগ্রজদের নিকট মাদল ও বাঁশিতে তালিম গ্রহণসহ পরবর্তীতে একক প্রচেষ্টায় মাদল ও বাঁশিতে বিভিন্ন তাল আয়ত্ত করেন। অতঃপর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপজেলা ও জেলাপর্যায়ে মাদল পরিবেশন করে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন।
পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ সম্ভব হয়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, উপজেলা ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি মাদল ও বাঁশিতে সংগত করে থাকেন। ১৯৮৩ সাল থেকে অধ্যবধি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোল সম্প্রদায়ের সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাদল ও বাঁশি পরিবেশন করেন। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাদল ও বাঁশি পরিবেশন করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোল সম্প্রদায়সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

গোলাম ফারুক মিথুন
সৃজনশীল সাংস্কৃতিক সংগঠক

চাঁপাইনবাবঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অঙ্গনে সৃজনশীল সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবে অন্যতম মো. গোলাম ফারুক মিথুন। ১৯৭১ সালের ৭ মে জেলাশহরের আজাইপুর মহল্লায় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বাংলা সাহিত্যের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ প্রয়াত প্রফেসর দেলসাদ আলী এবং মাতা প্রয়াত মাহফুজা খাতুন।
বাবার চাকরির সুবাদে শৈশব ও কৈশোরকাল কেটেছে বগুড়া জেলাশহরে। বগুড়া জিলা স্কুল, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যয়ন শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন সমাজকর্ম বিষয়ে। স্কুলজীবন থেকে কবিতা আবৃত্তি, অনুষ্ঠান উপস্থাপনাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। শিক্ষাজীবনে বিভিন্ন দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় একাধিকবার প্রথম স্থান অর্জন করেন।
১৯৮৮ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রবাহ সাহিত্য গোষ্ঠীতে যুক্ত হয়ে তাঁর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পথচলা শুরু। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ও ১৯৯২ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংসদে সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। ২০০২ সাল ২০১৪ এবং ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০২২ সাল হতে অদ্যবধি সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে যুক্ত আছেন। এছাড়াও ২০০৯ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ নির্বাচিত হয়ে অদ্যবধি দায়িত্ব পালন করছেন। জেলার একমাত্র কমিউনিটি রেডিও ‘রেডিও মহানন্দা ৯৮.৮ এফ.এম’র ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে ২০১২ সাল থেকে অদ্যবধি দায়িত্ব পালন করছেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-এর বর্তমান সহসভাপতিরও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের জেলাপর্যায়ের একমাত্র সৃজনশীল সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর কার্যনির্বাহী কমিটির (২০১২-২০১৫) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং অ্যাডহক কমিটির সক্রিয় সদস্য হিসেবে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি ও উপস্থাপনায় যুক্ত ছিলেন। বর্ণিত প্রতিষ্ঠান ছাড়াও জেলায় আরো ১০টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত রয়েছেন। তিনি একাধারে আবৃত্তিকার, উপস্থাপক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, নাট্যাভিনেতা, গল্পকার ও সংগঠক।