চাঁপাইনবাবগঞ্জে কেঁচো সার উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষে সরেজমিনে কেঁচো সারের পিট তৈরি ও পদ্ধতি অবহিতকরণ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপকেন্দ্র এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিনা উপকেন্দ্রে এই অবহিতকরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিনা’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান ড. মো. আজিজুল হক। বিনার চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আহমেদ নুমেরী আশফাকুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কানিজ তাসনোভা। সঞ্চালনা করেন বিনার চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জুবায়ের আল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সরেজমিনে কেঁচো সারের পিট তৈরি ও পদ্ধতি কৃষকদের সামনে তুলে ধরা হয়।
এসময় বক্তারা কেঁচো সারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কৃষকদের ধারণা প্রদান করে বলেন, কেঁচোর আহার পর্বের পর যে পাচ্য পদার্থ মলরূপে নির্গমন হয় তাকে কাস্ট বলে। এ কাস্টের ভেতর জীবাণু সংখ্যা এবং তার কার্যকলাপ বাড়ার কারণে মাটির উর্বরতা বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, পারিপার্শ্বিক মাটির তুলনায় কাস্টের মধ্যে জীবাণু সংখ্যা প্রায় হাজার গুণ বেশি থাকে। এ কাস্টের ওপরে বিভিন্ন প্রকার উৎসেচক উৎপাদনকারী ব্যাক্টোরিয়া জীবাণু বেশি থাকায় মাটির উর্বরতাও বাড়ে। কাস্টের কারণে মাটি থেকে গাছে ৬ শতাংশ নাইট্রোজেন এবং ১৫-৩০ শতাংশ ফসফরাস যোগ হতে দেখা গেছে। এছাড়াও অন্যান্য উদ্ভিদ খাদ্য উপাদান হিসেবে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম গাছ বেশি পরিমাণে গ্রহণ করতে পারে। কেঁচোর উপস্থিতিতে জৈবপদার্থের কার্বন ও নাইট্রোজেন অনুপাত প্রায় ২০:১ এর কাছাকাছি হয়। এ অনুপাতে গাছ সহজেই কম্পোস্ট থেকে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত কৃষকদের মধ্যে কেঁচোসার নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়, যা ভবিষ্যৎ জৈব সার তৈরির অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।