নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম উৎপাদন, বিপণন, পরিবহন, সুপার সাইক্লোন আম্ফানসহ ঝড়ে আম চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে করণীয়, নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন, ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনে করণীয়, ঝড়ে পড়া আম থেকে আমাজাত পণ্য উৎপাদনসহ আম বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে গবেষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসি ইসলাম জেসি। বুধবার (২৭ মে) দুপুর সাড়ে ১১ টায় আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন এই প্রতিষ্ঠানটির মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, ১৯৮৫ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি আম গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং পরে ১৯৯০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র রাখা হয়। বর্তমানে জনবল সংকটে পড়ে গবেষণা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বরাদ্দের অভাবে গবেষণাগারের ছাদ থেকে পলেস্তরা খসে পড়লেও মেরামত করা যাচ্ছেনা। বাগানটি ঠিকমত পরিচর্যা করা যাচ্ছে না। ডরমেটরিগুলো নষ্ট হচ্ছে।
ড. নজরুল জানান, বর্তমানে বিজ্ঞানি রয়েছেন ৪জন, কর্মচারী ১৬ জন এবং শ্রমিক ২২ জন।
ড. নজরুল তার উপস্থাপনায় এই কেন্দ্রের অর্জনসশূহ তুলে ধরেন। অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদেশী আমের জার্মপ্লাজম সংগ্রহ ৪৫টি এবং স্থানীয় ২৫৫টি। হাইব্রিড তৈরী ১১২টি, জাত মুক্তয়ণ ৯টি, জিআই পণ্য ক্ষিরাসাপাত আমের নিবন্ধন উল্লেখ্যযোগ্য।
মুক্তয়ণকৃত আমের জাত গুলোর মধ্যে বারি আম-১, ২ ও ৩ ১৯৯৬ সালে মুক্তয়ণ হয়। ২০০৩ মুক্তায়ণ হয় বারি আম-৪। ২০১০ সালে মুক্তয়ণ হয় ৩টি জাত। এগুলো হলো বারি আম-৬, বারি আম-৭ ও বারি আম- ৮। এছাড়া বারি আম-৯ মুক্তয়াণ হয় ২০১১ তে এবং সর্বশেষ মুক্তয়ণ হয় ২০১৯ সালে বারি আম-১২। ঝড়ের কবলে পড়ে এবার ২০ থেকে ২৫ ভাগ আম নষ্ট হয়েছে।
প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জমির উদ্দিন জানান, করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ছুটি ঘোষাণা করায় এইসব শ্রমিকরা কর্মস্থল ত্যাগ বাড়ি চলে যাওয়ায় আমবাগান ঠিকমতো পরিচর্যা করা যায় নি। ফলে বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এই নারী সংসদ সদস্য জানান, ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। পরে তিনি এই গবেষণা কেন্দ্রটির গবেষণাগারগুলোর বেহাল দশা ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দেন। সব শেষে তিনি গবেষণা কেন্দ্রের আম বাগান পরিদর্শন করেন।
এ-সময় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সাইফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ লাক্ষ্মা গকেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুখলেসুর রহমানসহ এই কেন্দ্রের অন্য কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।