শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪ by

গ্রাম আদালত সক্রিয় করার আহ্বান জেলা প্রশাসকের

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রাম আদালত কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষে প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনায় স্থানীয় অংশীজনদের নিয়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন এই সভার আয়োজন করে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুস সামাদ।
স্থানীয় সরকার চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক দেবেন্দ্র নাথ উরাঁওয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় গ্রাম আদালতকে আরো সক্রিয় ও সঠিকভাবে পরিচালনা করার লক্ষে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক সমাজ, ইমাম সমাজের সঙ্গে বড় পরিসরে মতবিনিময় করে তাদেরকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবুল কালাম সাহিদ। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন- দৈনিক চাঁপাই দৃষ্টির সম্পাদক এমরান ফারুক মাসুম, চাঁপাই চিত্রের সম্পাদক কামাল উদ্দিন, চাঁপাই দর্পণের সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু, ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক মোমেনা খাতুন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রাম আদালত সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইএসডিও) জেলা ম্যানেজার হাফিজ আল আসাদ।
সমন্বয় সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হলো- স্থানীয়ভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থাকে অধিকতর স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করা। গ্রামীণ জনগণের, বিশেষ করে, নারী এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা। উচ্চ আদালতে মামলার জট কমানো।
আরো বলা হয়, গ্রাম আদালতের সুবিধা হচ্ছে- গ্রাম আদালতে অল্প খরচে, স্বল্প সময়ে এবং অতিসহজে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। উভয়পক্ষই বিচারক প্যানেলে নিজেদের পছন্দমত প্রতিনিধি নিয়োগ দিতে পারেন। পক্ষগণ নিজের কথা নিজে বলতে পারেন, আইনজীবীর দরকার হয় না। সাক্ষ্যপ্রমাণ হাতের কাছে থাকে, পক্ষগণ চাইলেও কোনো কিছু গোপন করতে পারে না, ফলে সঠিক বিচার পাওয়া যায়। এক বিরোধ থেকে অন্য বিরোধ সৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকে।
সভায় বলা হয়, গ্রাম আদালতে সমঝোতার ভিত্তিতে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়, ফলে বিরোধীয় পক্ষগণের মধ্যে সম্পর্কের পুনঃস্থাপন ঘটে। দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় প্রকারের বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়।
দ্রুত ও কম সময়ে এবং নামমাত্র খরচে বিরোধ এর সমাধান (দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে ২০ টাকা এবং ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে ১০ টাকা আবেদন ফি দিতে হয়)।
গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য গ্রাম আদালতে বিচারযোগ্য দেওয়ানি মামলাসমূহ হচ্ছে- ১. কোনো চুক্তি, রশিদ বা অন্য কোনো দলিল মূল্যে প্রাপ্য টাকা আদায়ের জন্য মামলা। ২. কোনো অস্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা এর মূল্য আদায়ের জন্য মামলা। ৩. স্থাবর সম্পত্তি বেদখল হওয়ার এক বছরের মধ্যে এর দখল পুনরুদ্ধারের জন্য মামলা। ৪. কোনো অস্থাবর সম্পত্তির জবরদখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা। ৫. গবাদিপশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণের মামলা। ৬. কৃষি শ্রমিকদেরকে পরিশোধ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা। ৭. কোনো স্ত্রী কর্তৃক তার বকেয়া ভরণপোষণ আদায়ের মামলা ইত্যাদি।

About The Author

শেয়ার করুন