Last Updated on এপ্রিল ৫, ২০২৫ by
গোমস্তাপুরে ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আরো চারজন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর ও নজরপুর গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় অটোভ্যানযাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতির ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ আরো ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদের মধ্যে দুজন আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন বলেও পুলিশ জানায়।
গত শুক্রবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম এই তথ্য জানান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১১ মার্চ নাচোল উপজেলার নূরপুর গ্রামের মৃত এসরাইলের ছেলে ভ্যানচালক মো. রফিকুল ইসলাম (৪৯) বিয়ের যাত্রী নিয়ে গোমস্তাপুর উপজেলার জগতগ্রামে রিজার্ভ ভাড়ায় যান। পরে বিয়ে বাড়ি থেকে নাচোল উপজেলার আঝইর গ্রামে ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৮টার দিকে গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর ও নজরপুর গ্রামের মাঝামাঝি একটি আমবাগানের সামনে পৌঁছালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত মুখে মাস্ক ও কালো কাপড় বাঁধা অবস্থায় ৮ থেকে ১০ জন অজ্ঞাতনামা লোক অটোচার্জার ভ্যানের পথরোধ করে তার ভ্যানে থাকা ৭ জন যাত্রীকে এলোপাথারি মারধর করে। হাঁসুয়া, লাঠি, গাছের ডাল ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে রফিকুলের কাছে থাকা অটোচার্জার ভ্যান (পাঠলি গাড়ি), যার মূল্য অনুমান ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা ডাকাতি করে নেয় এবং ভ্যানে থাকা যাত্রীদের জিম্মি করে ঘটনাস্থল হতে অনুমান ৫০০ গজ দক্ষিণ পশ্চিমে আমবাগানের ভেতরে নিয়ে রফিকের পকেটে থাকা ৫০০ টাকা ও ১টি স্মার্ট ফোন এবং ভ্যানযাত্রী মো. মাজেদ আলীর (৪৫) কাছে থাকা নগদ ৩ হাজার ৬০০ টাকা, ১টি বাটন ফোন; যাত্রী মোসা. মর্জিনা বেগমের (৪৫) কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও ১টি নাকফুল যার ওজন ৪ আনা, ১টি বাটন মোবাইল ফোন, নগদ ১০০ টাকা; যাত্রী মোসা. সামিরা খাতুনের (২৪) কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও একটি নাকফুল, যার ওজন ৪ আনা, ১টি বাটন মোবাইল ফোন; যাত্রী মোসা. রেখা বেগমের (৪৫) কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও একটি নাকফুল, যার ওজন ৪ আনা, ১টি বাটন ফোনসহ সর্বমোট ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা ডাকাতি করে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় আহতরা গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এ ঘটনায় অটোচার্জার ভ্যানচালক মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গোমস্তাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর জড়িতদের ধরতে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের সহায়তায় ঘটনার পর হতেই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ আরো জানায়, অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত ১ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকশ টিম ডাকাতির ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সরদার গোমস্তাপুর উপজেলার মৃত তহুরুল ইসলামের ছেলে মো. মানিক আলী (৩২)সহ ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার টোকনা গ্রামের মৃত সিকিম আলীর ছেলে মো. আলামিন (১৯), নাচোল উপজেলার খলসী সিন্দুর মুচি খাঁড়ি এলাকার মো. একরামুল হকের ছেলে মো. আব্দুল মাতেন ওরফে মতিন (২৮), বড়ীয়া মোজা এলাকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. নাইম ইসলামকে (২৭) বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে মো. মানিক আলী ও মো. আলামিন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
পুলিশ আরো জানায়, এই দুজনের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে।