গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানীতে যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজনসহ ৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৩০ জন। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মিল্টনবাজার এলাকার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ঢাকা বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক ও গোপালগঞ্জ শহরের বটতলা এলাকার প্রফুল্ল কুমার সাহার ছেলে ডা. বাসুদেব কুমার সাহা (৫২), তার স্ত্রী শিবানী সাহা (৪৮), ছেলে আহসান উল্যাহ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপ্নীল সাহা (১৯) ও তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক আজিজুর ইসলাম (৪৪), কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা গ্রামের পিয়ার আলী মোল্যার ছেলে ফিরোজ মোল্যা (৪৮), তার স্ত্রী রুমা বেগম (৪০) এবং ওই গ্রামের জিন্দার ফকিরের ছেলে অনিক বাবু (২৮), অনিকের নববিবাহিত স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার (১৯)।
এ ঘটনায় আহত ৩০ জনের মধ্যে ১৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেনÑ গোপালগঞ্জের দিদার শরীফ (৫০), সোবাহান (৩৮), রুমা (৩০), মাসুম মোল্যা (১৩), ইসমত আরা (৪০), আলিফ (৫), সিফাত (৩), নড়াইলের বাদল (২৫), বায়েজিদ (১২), মারুফ (২২), ঢাকার আরজু বেগম (৩৫), ফারুক হোসেন (৫০), হিরা বেগম (৩৬), হাওয়া বেগম (৩৪), হোসাইনর (১২), আব্দুর রহমান (৫), পিরোজপুরের কালাম মোল্যা (৪৭), কামরুল (৪৬), শরীয়তপুরের জোহরা বেগম (৭৫)।
ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা রাজিব পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মিল্টনবাজার এলাকায় পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা প্রাইভেটকার ও কাশিয়ানী সদর থেকে ছেড়ে আসা মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুমড়ে-মুচড়ে প্রাইভটকারটি সড়কের পাশে ধান মাড়াই কাজে কমর্রত শ্রমিক ও মেশিনের ওপর গিয়ে ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে একই পরিবারের তিনজন, ধান মাড়াইরত স্বামী-স্ত্রীসহ ৮ জন নিহত হন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৩০ জন। খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও স্থানীয়রা হতাহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও কাশিয়ানী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশ প্রহরায় লাশগুলো হাসপাতাল ও মর্গে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশের স্বজনরা এলে তাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, গোপালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহাসিন উদ্দিন এবং জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উদ্ধার কাজ তদারকি করি।’ আহতদের সঠিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য চিকিৎসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিহতদের পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হবে।