বিএনপি নেতারা গণতন্ত্র নিয়ে দ্বিচারী আচরণ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপির শীর্ষ নেতারা গণতন্ত্র নিয়ে দ্বৈত আচরণ করছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে তামাশা করেছে দলটি। জনগণের আস্থা হারিয়েছে বলেই বিএনপি আজ জনগুরুত্বহীন।’
সেতুমন্ত্রী শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি এতিম, প্রতিবন্ধী, অসহায়দের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ এবং নিহত উমামা বেগম কনকের পরিবার ও ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্ববাজার জ্বালানি ও খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে। সেই পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে। বিএনপি নেতাদের সমালোচনা শুনে লাভ নেই। পাকিস্তান-শ্রীলংকার অবস্থার সাথে বাংলাদেশের অবস্থা তুলনা করে দেখুন, এরপরও বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের মতো এত ভালোভাবে দেশ কেউ পরিচালনা করেনি। এ সময় তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ অতীতে কখনো এত ভালো ছিল না। তিনি বলেন, দেশ চালাতে গেলে ছোটখাটো ভুল হতে পারে। সব কাটিয়ে আওয়ামী লীগ যেভাবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে অন্য কেউ তা পারেনি। বিএনপি নেতারা শুধু সমালোচনাই করতে জানে।
‘সরকার দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে দেশে যা করেছিল তা জনগণ এখনো ভুলে যায়নি। তাদের বহুদলীয় গণতন্ত্র ছিল বহুদলীয় ছদ্মবেশী তামাশা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে বলেন, যে নিজে সংসদ সদস্য হয়ে সংসদে যায়নি, তার মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
গণতন্ত্রের নামে মুখোশ পরা বর্ণ চোরাদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ’৭৫ পরবর্তী কালে শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামল ছাড়া আর কোনো সরকারের শাসনামল ভালো ছিল না।
এ বছরের জুন মাসে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে পারে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, শতভাগ সততার সঙ্গে পদ্মা সেতুর কাজ করা হচ্ছে। কোনো বিদেশী ঋণ ছাড়াই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ হচ্ছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশ কখনো ঋণ খেলাপি হয়নি হবেও না। অন্যদিকে অন্য সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ একাধিকবার ঋণ খেলাপি হয়েছিল।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকার নির্বাচন কমিশনকে শুধু সহযোগিতা করবে। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন। আইন-শৃঙ্খলা, প্রশাসন সবকিছুই থাকবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সমালোচনা না করে আসুন নির্বাচনে লড়াই করি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেনÑ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরসহ অন্যরা।
পরে এতিম, প্রতিবন্ধী ও দুস্থ অসহায়দের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ এবং নিহত কনকের স্বজনদের মধ্যে আার্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন নেতৃবৃন্দ।