সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on আগস্ট ২১, ২০২৪ by

খালেদা জিয়া হয়ে পর্দায় আসছেন নিপুণ

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে গত মঙ্গলবার ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ নামে নতুন একটি সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দেন নির্মাতা এম কে জামান। এবার জানা গেল, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ২০১৩ সালে একটি সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন কিংবদন্তি গীতিকার-প্রযোজক ও পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। নাম ‘আপসহীন’। আর এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। জানা গেছে, সিনেমাটি আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বায়োপিক। তখন প্রধান বিরোধীদল ছিল বিএনপি। তবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমাগত অস্থিরতার দিকে ধাবিত হলে সিনেমাটির বিষয়ে গোপন রাখা হয়। এবার ১১ বছর পর তা আলোর মুখ দেখতে চলেছে। এতে বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভূমিকায় রয়েছেন হেলাল খান। এদিকে, ২০২২ সালে মারা যান গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সিনেমাটি নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিল বলে জানা গেছে। বাবার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতেই এটি শিগগিরই মুক্তি দিতে চান গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ছেলে সরফরাজ আনোয়ার উপল। তিনি বলেন, ‘আমরা পারিবারিকভাবেও উদ্যোগ নিয়েছি বাবার সব সৃষ্টি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। বাবার নির্মিত শেষ চলচ্চিত্র এটি। দর্শক দেখলে বাবার আত্মা শান্তি পাবে। এটা শুধু যে একটা চলচ্চিত্র তা কিন্তু নয়, একই সঙ্গে সফল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার বায়োপিক। দেখলে দর্শক জানতে পারবে দেশের প্রতি তাদের ভালোবাসা, ত্যাগ ও মহিমার কথা।’ জানা যায়, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয় ‘আপসহীন’র কাজ। তখন দ্রুত পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ সম্পন্ন করে সেন্সরে জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন হেলাল খান। তবে এর আগেই গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এই কর্মী। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাস-এ যুক্ত ছিলেন। পরিকল্পনা ছিল, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (৫ জানুয়ারি) আগে সিনেমাটি সারাদেশে মুক্তি দেওয়ার। কিন্তু হেলাল খান জেলে থাকায় গাজী মাজহারুল আনোয়ার ‘আপসহীন’র মুক্তির কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। হেলাল খান বলেন, ‘ম্যাডাম অসুস্থ। এই মুহূর্তে এটা নিয়ে কথা বলাটা ঠিক হবে না। তিনি সুস্থ হলেই ছবিটি নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করব। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে।’ এই অভিনেতা আরও বলেন, ‘মাঝখানে ১১ বছর পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে অনেক কিছু ঘটে গেছে। তাই ছবিতে বেশ কিছু পরিবর্তন-পরিমার্জন করতে হবে। কিছু দৃশ্য হয়ত নতুন করে শুটিং করব। কিছু দৃশ্য সম্পাদনা করে বাদ দেওয়া হবে। এ জন্যও কিছু দিন সময় লাগবে। আশা করি, এই বছরই দর্শকদের ছবিটি দেখাতে পারব।’ অন্যদিকে, ব্যক্তিজীবনে আওয়ামী লীগের সমর্থক নিপুণ আক্তার। সিনেমায় যুক্ত হওয়ার নেপথ্যের ঘটনা জানিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একদিন গাজী মাজহারুল আনোয়ার আঙ্কেল আমার বাসায় আসেন। এর কথা জানালেন। তখন শাহ আলম কিরণ ভাইয়ের “৭১-এর মা জননী”র শুটিং চলছে। আমাকে আঙ্কেল বলেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জীবনী নিয়ে “আপসহীন”। আমাকে তার চরিত্রেই রূপদান করতে হবে। জানতে চাইলেন, আমার আপত্তি আছে কি না। জানালাম, অভিনেত্রী হিসেবে ম্যাডামের চরিত্রে অবশ্যই অভিনয় করা উচিত। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তখন বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে রাজপথে সরব। আমি রাজি হওয়ায় আঙ্কেল খুব খুশি হলেন। জানালেন, আমার আগে জয়া আহসান ও নুসরাত ইমরোজ তিশার কথা উঠেছিল। তবে গাজী আঙ্কেলই হেলাল ভাইকে বলেছিলেন, নিপুণ হলে ম্যাডামের চেহারার সঙ্গে দারুণ মিলবে।’ শুটিংয়ের আগে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অনেক পড়াশোনাও করেছেন নিপুণ। গাজী মাজহারুল আনোয়ারই তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। নিপুণ বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আঙ্কেলের (গাজী মাজহারুল আনোয়ার) প্রতি। আজ তিনি বেঁচে নেই, তবে তার সৃষ্টি আছে। আশা করছি, হেলাল ভাই দ্রুত ছবিটি মুক্তি দেবেন। আমিও তার সঙ্গে যোগাযোগ করব।’

About The Author

শেয়ার করুন