বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ রজব, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on অক্টোবর ২৬, ২০২৪ by

কৃষিপণ্যের স্পেশাল ট্রেনের শুরুটা ভালো হলো না, পণ্য ছাড়াই ছেড়ে গেল রহনপুর স্টেশন থেকে

আল-মামুন বিশ্বাস, গোমস্তাপুর :

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে চালুর প্রথম দিন পণ্য ছাড়াই স্পেশাল ট্রেনটি রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে। তবে ট্রেনটি চলাচল উপলক্ষে স্টেশনে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) নির্দিষ্ট সময়ের আধাঘণ্টা দেরিতে সকাল পৌনে ১০টায় রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। তবে ট্রেনটিতে কোনো পণ্য বুকিং হয়নি বলে জানিয়েছেন রহনপুর রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মামুনুর রশিদ।
তিনি জানান, কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য স্পেশাল এই ট্রেনটি প্রথম দিন আধাঘণ্টা দেরিতে পৌনে ১০টায় রহনপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায়। এই ট্রেনটি চলাচলের বিষয়ে কৃষক, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। ট্রেনটিতে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত লাগেজ ছাড়া আরো ৪টি সাধারণ লাগেজ রয়েছে। ট্রেনটি রহনপুর রেলস্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে নাচোল, আমনুরা জংশন, রাজশাহীর কাঁকনহাট, রাজশাহী সদর, সারদা রোড, আড়ানি, নাটোরের আব্দুলপুর, আজিমনগর, পাবনার ঈশ্বরদী বাইপাস, চাটমোহর, বড়াল ব্রিজ ও জয়দেবপুর হয়ে ঢাকা তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছাবে আজ (গতকাল শনিবার) বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে।
মামুনুর রশিদ জানান, প্রথম দিন আবহাওয়া খারাপ থাকায় ট্রেনটিতে কোনো বুকিং হয়নি। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাকে (সহকারী স্টেশন মাস্টার) জানিয়েছেন ট্রেনটি বিকেল ৫টার পর ছাড়লে পণ্য বুকিং করতে তাদের সুবিধা হবে। সারাদিন বিভিন্ন কাঁচা পণ্য কিনে বিকেলে বুকিং দেওয়া তাদের সহজ হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এদিকে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মূল ভাড়া কম থাকলেও কুলি ও অন্যান্য পরিবহন খরচ মিলে সড়কপথের চেয়ে ট্রেনে খরচ পড়ছে বেশি। আরেকদিকে ট্রেনের সময় সকালে হওয়ায় বাজারজাত নিয়েও রয়েছে নানা শঙ্কা। তবে বিকেল কিংবা রাতে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করলে দিনের কৃষিপণ্য তুলে রাতভর পরিবহন করে সকালে মোকামে পৌঁছনো যায়।
এছাড়া ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়সহ নানা কারণে সময়মতো মালামাল পৌঁছাতে না পারলে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কা করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এসব কারণে প্রথম দিনে শাক-সবজি ছাড়াই ট্রেনটিকে শূন্য লাগেজ নিয়েই ছুটতে হয়েছে ঢাকার দিকে।
তারা আরো জানান, বিশেষ এই ট্রেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে পণ্য পরিবহনে ভাড়া কেজিপ্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা। এর সঙ্গে মাঠ থেকে স্টেশন, স্টেশন থেকে মোকাম আলাদা পরিবহন খরচ ও কুলি খরচ মিলে প্রতি কেজির খরচ দাঁড়ায় ৩ টাকারও বেশি। অন্যদিকে, ট্রাকে মালামাল পরিবহনের খরচ হয় দুই থেকে আড়াই টাকা। ফলে ট্রেনে সাড়া মিলছে না ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি সন্ধ্যার সময়ে ট্রেন চালু ও ব্যাপক হারে প্রচার-প্রচারণা করার দাবি ব্যবসায়ীদের।
আজিম উদ্দিন নামের এক কাঁচামাল ব্যবসায়ী বলেন, ট্রেনের মূল ভাড়া কম। তবে ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন এবং স্টেশন থেকে মোকাম আলাদা যানবাহনে পরিবহন করতে বাড়তি খরচ রয়েছে। এছাড়া ট্রেনে মালামাল তোলা ও নামাতে কুলিদের অনেক টাকা দিতে হয়। কুলিরা যে যার ইচ্ছেমতো টাকা নেয়। তাই কেউ ট্রেনে পণ্য পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রহনপুর-ঢাকা রুটে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেনে রয়েছে পাঁচটি লাগেজ ভ্যান (বগি)। এর মধ্যে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বগি রয়েছে একটি, বাকি চারটি সাধারণ বগি। অত্যাধুনিক লাগেজ ভ্যানে কৃষিপণ্যের মধ্যে ফল, সবজি ছাড়াও রেফ্রিজারেটেড লাগেজ ভ্যানে হিমায়িত মাছ, মাংস ও দুধ পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের ঢাকায় যাওয়ার জন্য রয়েছে ব্যবস্থা। সবজির সঙ্গে তাদের বিনা ভাড়ায় যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল থেকেই বৃষ্টি ও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় প্রথম দিনে বুকিং না হওয়ার দাবি রেল কর্তৃপক্ষের।
প্রসঙ্গত, বিশেষ ট্রেনটি সপ্তাহে একদিন শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে পণ্য নিয়ে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাবে এবং ১৩টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছাবে।

About The Author

শেয়ার করুন