কখনো কোনো চাপের কাছে মাথানত করেনি বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী

6

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়ভাবে বলেছেন, বাংলাদেশ কখনো কোনো চাপের কাছে মাথানত করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না, বরং জনগণের শক্তিতে দেশ এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনো কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করেনি, করবেও না। আমাদের যে আত্মবিশ্বাস আছে তা নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব এবং জনগণের শক্তি নিয়েই দেশ এগিয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার তার কার্যালয়ের শাপলা হলে চলমান বন্যা পরিস্থিতি এবং আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
মানবাধিকার সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার আমাদের শেখাতে আসবে কারা, যারা খুনিদের আশ্রয় দেয়, স্কুলে গুলি হয়, ছাত্র-ছাত্রী মারা যায়, রাস্তাঘাটে পুলিশ মানুষকে গলায় পারিয়ে মেরে ফেলে তারা কি মানবাধিকার শেখাবে?’ তাদের উস্কানিতে আমাদের দেশের কিছু মানুষের আস্ফালন (নাচানাচি) হবে এটা ঠিক; কিন্তু আমরা আমাদের আত্মবিশ্বাস নিয়েই চলব, জনগণের শক্তি নিয়েই চলব, বলেন তিনি।
‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ সংক্রান্ত অপর একটি প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, যখন একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, জনগণের তাদের ওপর এই আস্থা থাকতে হয়। নির্বাচনে তারা জয়লাভ করলে কে তাদের সরকারের প্রধান হবেÑ সেটা জনগণ আগে থেকেই জানতে চায়। তিনি আরো বলেন, ‘জনগণ প্রথম থেকেই এটা বিবেচনা করে। এটা শুধু আমাদের দেশেই ঘটে না, বরং বিশ্বব্যাপীই এমনটা হয়ে থাকে। তাদের (বিএনপি) নেতা হিসেবে কে নির্বাচনে অংশ নেবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘তারা কি তাদের নেতা হিসেবে জনগণকে পলাতককে (তারেক রহমান) দেখাবে? তিনি তো দেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন।’ তিনি বলেন, সহজেই ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেতে কত টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে!
কিভাবে একজন দ-াদেশপ্রাপ্ত আসামি ব্রিটিশ নাগরিক হলো তা বের করতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদি আপনারা এটা বের করতে পারেন, তবে সবকিছু বেরিয়ে আসবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাই, তারা (বিএনপি) কিভাবে নির্বাচনে অংশ নিবে এবং এক্ষেত্রে গণতন্ত্রের ভুলটা কোথায়? তাদের দল এখনো বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে, যাদের এখন আর কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়া, অবশিষ্ট রইল বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোÑ যেগুলো অব্যাহতভাবে বিভক্ত হতে হতে ছোট থেকে আরো ছোট হয়ে গেছে এবং এখন দলগুলো কখনো ডান দিকে কখনো বা বাম দিকে ঝুঁকে যায়। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তাই, আমাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কে আছে?’ তিনি একটি শক্তিশালী দল গঠন করে নির্বাচনের মাঠে নামার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আসুন নির্বাচনের ময়দানে নামি এবং জনগণকে বেছে নিতে দেই।’
২০০৯ সাল থেকে দেশে যে পরিবর্তন এসেছে তা দেখার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (বিএনপি) জন্য কান্নাকাটি করে লাভ নেই। তিনি আরো প্রশ্ন তোলেন, ‘বাংলাদেশে কি বিএনপির একজন যোগ্য নেতা নেই, যাকে তারা দলের চেয়ারম্যান করতে পারে।’
সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ এই উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন দল, যেটি গণমানুষের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর জন্মস্থান কোথায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি দুই দলই সামরিক স্বৈরশাসকদের দ্বারা অভ্যুত্থান ও সামরিক আইনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ অন্যরা।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।