এবারো থাকছে না আম পঞ্জিকা পাড়া যাবে পরিপক্ব হলেই
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবারো থাকছে না আম পঞ্জিকা থাকবে না। আম পরিপক্ব হলেই বাজারজাত করা যাবে।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার প্রণয়ন, নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন, বিপণন, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ’ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আমচাষি, বাগানমালিক, ব্যবসায়ী, আড়তদার, আম উদ্যোক্তাদের দাবির প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ মঞ্চে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ। সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যের পর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ বলেন, গেল দুই বছর এই জেলায় আম পাড়ার কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। আগের বছরের মতো এবছরও আম পাড়ার জন্য কোনো ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন করা হবে না। অর্থাৎ আম যখন পরিপক্ব হবে, কৃষক ভাইয়েরা, আমচাষিরা যখন বুঝবেন আম পরিপক্ব হয়েছে, তখনই গাছ থেকে আম পাড়বেন। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসন মনিটারিং করবে। পাশাপাশি গাছ থেকে কেউ যাতে অপরিপক্ব আম নামাতে না পারে, সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের নজরদারি থাকবে।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন- জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফাজ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী, হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক মনজুরে মাওলা, রাজশাহী রেলের ডেপুটি চিফ কমার্সিয়াল ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন, জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মমিনুল হক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তৌফিক আজিজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক, আম উদ্যোক্তা আহসান হাবিব, ইসমাইল খান শামীম, আবু তালেবসহ অন্যরা।
সভায় উদ্যোক্তারা আমের ওজন বিষয়েও কথা বলেন। তারা দাবি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার আম বাজারগুলোতে যেন আমের ওজন একই রকম হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সভায় কাঁচা আম প্রতি ৪৫ কেজিতে এক মণ ও পাকা আম সাড়ে ৪২ কেজিতে এক মণের মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, এটি কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নয়। এটিকে একটি মানদণ্ড হিসেবে আমরা নির্ধারণ করছি।
এছাড়াও আম উদ্যোক্তারা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার আম উৎপাদন হয়। অথচ একটি আম গবেষণা কেন্দ্র নেই। এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ আম গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের দাবি করেন তারা। এছাড়া বিদেশে আম রপ্তানির জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জেই একটি কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র অত্যন্ত জরুরি। চাষিরা যেন এখানেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিদেশে আম পাঠাতে পারেন।
উল্লেখ্য, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেÑ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে ৩ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।