ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌপথে ৩৫৫ প্রাণহানি

5

এবার ঈদযাত্রায় সারা দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৩৪১টি দুর্ঘটনায় ৩৫৫ জন নিহত ও ৬২০ জন আহত হয়েছেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
এতে জানানো হয়, পবিত্র ঈদুল ফিতরে সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কে ৩০৪টি দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ৫৬৫ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সবমিলিয়ে ৩৪১টি দুর্ঘটনায় ৩৫৫ নিহত ও ৬২০ জন আহত হয়েছেন।
সংগঠনটি জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
এবারের ঈদযাত্রায় আগের ঈদগুলোর চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, নিহত ২১ দশমিক ১ শতাংশ এবং আহত ১৩ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের ঈদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও পরিবহন ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত গরমসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত হয়েছে।
এতে বলা হয়, বর্তমান সরকারের গত ১৪ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো ছিল। সঙ্গে ছিল ঈদের ছুটি ১ দিন বাড়ানোর সুফল। দেশের সবকটি সড়ক মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর ১৮ দশমিক ২ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত, সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে এবারের ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। এ কারণে ভোগান্তি কমার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, প্রাণহানি ২১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে।
ঈদযাত্রা শুরুর দিন ১৫ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত গত ১৫ দিনে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ৫৬৫ জন আহত হয়েছে। ২০২২ সালের ঈদুল ফিতরে যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, প্রাণহানি ২১ দশমিক ১ শতাংশ, আহত ৩০ শতাংশ কমেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারো দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৬৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৭ জন নিহত, ১২০ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৫৪.৩ শতাংশ, নিহতের ৫১ শতাংশ এবং আহতের ২১.৩ শতাংশ।
সংঘটিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৩৬.৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৬.৫ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ৫.৬ শতাংশ কার মাইক্রো জিপ, ৪.৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা মাহিন্দ্রা, ৬.৭ শতাংশ অটোরিকশা, ১২.৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল ও ১৬.৯ শতাংশ বাস দুর্ঘটনার শিকার হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল চৌধুরী বলেন, সড়কে মানসম্মত বাসের অভাবে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ইজিবাইকের মতো ছোট পরিবহন অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। ফলে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের আমদানি বন্ধের পাশাপাশি গণপরিবহনকে বিকশিত করতে হবে।