জার্মানির নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের শরীরে ‘ইহুদি রক্ত’ ছিল, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার এক ফোনকলে পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট একথা জানান বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। বেনেটের দপ্তর জানিয়েছে, এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্টের কথা হয়েছিল, ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলার পর বেনেট মারিউপোলের আজভস্তাইল ইস্পাত কারখানায় আটকা পড়া বেসামরিকদের বের হওয়ার একটা পথ করে দেওয়ার জন্য পুতিনকে অনুরোধ করেন। এ উত্তরে পুতিন বেনেটকে জানান, ওই ইস্পাত কারখানায় আটকা পড়া বেসামরিকদের বের করতে জাতিসংঘ ও রেড ক্রসের তত্ত্বাবধানে একটি মানবিক করিডোরের অনুমোদন দেবে রাশিয়া। হিটলারের বংশে ইহুদি ‘রক্ত’ মিশেছিল, চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ইসরায়েল।
ল্যাভরভের বক্তব্যকে ‘অমার্জনীয়’ অভিহিত করে ‘মিথ্যা’ মন্তব্যে ল্যাভরভ ইহুদি নিধনের ভয়াবহতাকে হেয় করেছেন বলে অভিযোগ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। ল্যাভরভ রোববার ইতালির এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাতকারে ওই মন্তব্য করেন। ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি নিজে ইহুদি হওয়ার পরও রাশিয়া কীভাবে ইউক্রেইনকে নাৎসিমুক্ত করার জন্য লড়ার দাবি করতে পারে-এমন প্রশ্নের জবাবে ল্যাভরভ বলেন: “জেলেনস্কি ইহুদি তো কী হয়েছে? তিনি ইহুদি হলেও তার নাৎসি যোগ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। হিটলারও অর্ধেক ইহুদি ছিলেন। আমার বিশ্বাস তার শরীরেও ইহুদি রক্ত ছিল।”
পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পর বেনেট জানান, তিনি ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রহন করেছেন। ‘ইহুদি জনগণের ও ইহুদি নিধনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা স্পষ্ট’ করায় রাশিয়ার নেতাকে ধন্যবাদ জানান তিনি। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া আক্রমণ শুরু করার পর ইউক্রেইনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল ইসরায়েল। কিন্তু প্রতিবেশী সিরিয়ার ক্ষমতাসীনদের টিকিয়ে রাখতে ভূমিকা রাখা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি এড়াতে প্রথমদিকে সরাসরি মস্কোর সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকে দেশটি এবং রাশিয়ার শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো নিষেধাজ্ঞাও দেয়নি তারা।
মস্কো ও কিইভ, উভয়ের সঙ্গে মিত্রতা বজায় রাখতে চায় তারা, এমনটি জানিয়ে ইসরায়েল দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে শুরু করেছিল। কিন্তু মার্চের শেষ দিকে ইসরায়েলের রাস্তায় আরবদের বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনার পর বেনেট ওই প্রচেষ্টা স্থগিত করেছিলেন বলে দেশটির এক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এখন পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ওই প্রচেষ্টা ফের শুরু করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।