Last Updated on মে ২৩, ২০২৪ by
ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন আতালান্তা
অসাধারণ পথচলায় দারুণ সব রেকর্ড আর বুন্ডেসলিগা জয়ের ইতিহাস গড়া বায়ার লেভারকুজেন আরেকটি শিরোপার হাতছানিতে মাঠে নেমে পথ হারিয়ে ফেলল। উজ্জীবিত আতালান্তা প্রথমার্ধেই করল জোড়া গোল, যে ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারল না লেভারকুজেন। দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকে নায়ক হয়ে উঠলেন অ্যাডেমোলা লুকম্যান। প্রথমবারের মতো ইউরোপা লিগ জিতল ইটালিয়ান ক্লাবটি। ডাবলিনের আভিভা স্টেডিয়ামে বুধবার রাতের ফাইনালে ৩-০ গোলে জিতে দীর্ঘ ছয় দশকের শিরোপা খরা কাটিয়েছে আতালান্তা। মৌসুমের শুরু থেকে কোনো ম্যাচে না হেরে, সব মিলিয়ে ৫১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার ইউরোপিয়ান রেকর্ড গড়ে এবং পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখে প্রথমবারের মতো বুন্ডেসলিগা জয়ের রেকর্ড গড়ে এদিন খেলতে নামে লেভারকুজেন। অনেকের চোখেই তারা ছিল ফেভারিট। কিন্তু, ম্যাচ শুরু হতেই বদলে যেতে থাকে সবকিছু। রক্ষণে বারবার ভুল করতে থাকে লেভারকুজেন। আক্রমণেও তারা ছিল সাদামাটা। তাই বল দখলে এগিয়ে থাকলেও সত্যিকার অর্থে প্রতিপক্ষকে তেমন কোনো চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেনি দলটি। ম্যাচের আগে আতালান্তা কোচ জান পিয়েরো গাসপেরিনি আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেছিলেন, শাবি আলোন্সোর দলকে নিয়ে মোটেও ভীত নন তারা। মাঠেও তাই করে দেখাল তার দল, মেটাল ক্লাবের দীর্ঘসময়ের ক্ষুধা। সেই ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে ইটালিয়ান কাপের ফাইনালে তোরিনোকে হারিয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিল তারা। ৬১ বছর পর মিলল দ্বিতীয়র স্বাদ। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য করতে থাকে আতালান্তা। লেভারকুজেন বল দখলে এগিয়ে থাকলেও, আক্রমণে একদমই সুবিধা করতে পারছিল না তারা। দ্বাদশ মিনিটে গোল খেয়ে বসে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। বক্সে ডান দিক থেকে দুইজনের চ্যালেঞ্জের মুখে পাস বাড়ান দাভিদে জাপাকস্তা। ছয় গজ বক্সের বাইরে বল ক্লিয়ার করার চেষ্টায় আরেকটু ভালো করা উচিত ছিল আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার এসেকিয়েল পালাসিওসের, পারেননি তিনি। জোরাল শটে দলকে এগিয়ে নেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড লুকম্যান। অপ্রতিরোধ্য পথচলায় সম্প্রতি নিজেদের ‘নেভারলুজেন’ নাম দেওয়া লেভারকুজেন ২৬তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করে। নিজেদের সীমানায় পজেশন হারিয়ে ফেলে তারা। বল ধরে বক্সের বাইরে একজনকে কাটিয়ে জায়গা বানিয়ে বুলেট গতির শটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন লুকম্যান। ৩৫তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ব্যবধান কমানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে একরাশ হতাশা উপহার দেন আলেহান্দ্রো গ্রিমাল্দো। গোলরক্ষককে একা পেয়ে দুর্বল শটে তার হাতে বল তুলে দেন তিনি। দ্বিতীয় গোল হজমের খানিক পরই ভিক্টর বোনিফেসকে ওয়ার্ম-আপ করতে দেখা যায়। আক্রমণে জোর দিতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ডিফেন্ডার ইয়োসিপ স্তানিসিচকে বসিয়ে নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার বোনিফেসকে নামান লেভারকুজেন কোচ। যদিও প্রতিপক্ষকে ভাবনায় ফেলার মতো বেশি কিছু করতে পারেনি তারা। দ্বিতীয় অর্ধে জোর চেষ্টা চালালেও আতালান্তার জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেনি দলটি। উল্টো ৭৫তম মিনিটে আরেক গোল খেয়ে তাদের সব আশাই প্রায় শেষ হয়ে যায়। সতীর্থের পাস ধরে ঠা-া মাথায় বক্সে ঢুকে, সামনের একজনের বাধা সামলে জোরাল শটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন লুকম্যান। মৌসুমে এর আগে অনেকবারই লেভারকুজেনকে হারের দুয়ার থেকে ঘুরে দাঁড়াতে দেখা গেছে। কিন্তু এবার আর কিছুই করতে পারল না তারা। মৌসুমে প্রথম হার আর অনেক বড় এক শিরোপা হারানোর হতাশায় মাঠ ছাড়ল আলোন্সোর দল। অন্যদিকে, ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় প্রথম শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতে উঠল আতালান্তা।