আরো ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা

13

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করেছেন। দারিদ্র্য বিমোচনে প্রধানমন্ত্রীর নকশা ও বাস্তবায়নে তার স্বপ্নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তিনি জমিসহ আরো ২২ হাজার ১০১টি বাড়ি বিতরণ করেন।
বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সুবিধাভোগীদের মধ্যে বাড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বলেন, “আমি দেশে আরো ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করছি।”
নতুন ঘোষণায় চতুর্থ ধাপে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের দ্বিতীয় দফায় ২১টি জেলা ও ৩৩৪টি উপজেলা গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত হয়েছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে মোট উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা এখন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১তে দাঁড়িয়েছে।
নতুন ১২টি ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হলো- মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ময়মনসিংহ, শেরপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি।
যে ১২৩টি ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলা হলো- শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট; কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, নিকলী, হোসেনপুর, বাজিতপুর, মিঠামইন ও করিমগঞ্জ; টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, নাগরপুর, মির্জাপুর, কালিহাতী ও বাসাইল; মানিকগঞ্জের শিবালয়, হরিরামপুর ও সদর; মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও টঙ্গীবাড়ি; রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ; নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সদর; ফরিদপুরের বোয়ালমারী, চরভদ্রাসন, ভাঙ্গা ও সদর; ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, গফরগাঁও, মুক্তাগাছা ও সদর; শেরপুরের শ্রীবরদী ও সদর; জামালপুরের ইসলামপুর ও সরিষাবাড়ী; কক্সবাজারের পেকুয়া, উখিয়া ও টেকনাফ; চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও আনোয়ারা; চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ ও কচুয়া; নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, সেনবাগ ও সদর; কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, বরুড়া, হোমনা, তিতাস, মেঘনা ও বুড়িচং; ফেনীর দাগনভূঁইয়া, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী; রংপুরের বদরগঞ্জ; দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ, বীরগঞ্জ, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট ও সদর।
অন্য উপজেলাগুলো হলো- ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল ও সদর; নীলফামারীর ডোমার ও জলঢাকা; নওগাঁর আত্রাই, বদলগাছী, মান্দা, নিয়ামতপুর, পোরশা, সাপাহার ও সদর; সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, শাহজাদপুর ও কামারখন্দা; বগুড়ার গাবতলী, আদমদীঘি ও সদর; নাটোরের সিংড়া, নলডাঙ্গা ও সদর; পাবনার চাটমোহর, বেড়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও সুজানগর; ঝিনাইদহে ঝিনাইদহ সদর; সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ ও সাতক্ষীরা সদর; যশোরে যশোর সদর; কুষ্টিয়ার খোকসা; খুলনার দিঘলিয়া; নড়াইলের কালিয়া; পিরোজপুরে পিরোজপুর সদর; ঝালকাঠির ঝালকাঠি সদর; পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও গলাচিপা; বরগুনার পাথরঘাটা, বেতাগী, তালতলী; সিলেটের বিয়ানীবাজার, কোম্পানীগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জকিগঞ্জ; মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার সদর, কুলাউড়া, বড়লেখা ও জুড়ী; হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ, বাহুবল, লাখাই, হবিগঞ্জ সদর, মাধবপুর ও শাল্লা এবং সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী আরো নয়টি জেলাÑ মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) আশ্রয়ণ প্রকল্পটি এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৭ পরিবারকে তাদের মালিকানায় দুই ডিসিমাল জমিসহ আধা-পাকা বাড়ি দিয়ে পুনর্বাসন করেছে। এসব বাড়িতে বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বিনামূল্যে সংযোগ দেয়া হয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্প ও অন্যান্য কর্মসূচির আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬০৭টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বাড়িঘর ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ নেন।