আম্ফান : প্রস্তুত ১২০৭৮টি সাইক্লোন শেল্টার, মঙ্গলবার সকাল থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার আহবান

30

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসায় উপকূলের জেলাগুলোর নিচু ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল থেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
সোমবার (১৮ মে) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। উপকূলের নিচু ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা, আপনারা আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাবেন।’
এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপকূলের দিকে ধেয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ৫১ লাখ ৯০ হাজার মানুষের জন্য ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। গর্ভবর্তী নারী, নারী, প্রতিবন্ধী ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা দিতে হবে। এরপর অন্যরা। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরতদের জন্য খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা আমরা করেছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে মংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সন্ধ্যার পর এটি সুপার সাইক্লোনে রূপ ধারণ করবে।
করোনা সংক্রমণের সময়ে প্রত্যেকটি আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে উপকূলবর্তী সব জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আমার কথা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) মহামারির মধ্যে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়ার সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করছি। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আসবেন তাদের মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি মানুষকেও যাতে প্রাণ হারাতে না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। যেসব মানুষ ঝুঁকিতে আছেন মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগেই তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হবে। অন্য যে কোনো দুর্যোগের তুলনায় এবার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এনামুর রহমান বলেন, কেন্দ্রে যারা আশ্রয় নেবেন তাদের জন্য ৩ হাজার ১০০ টন চাল, ৫০ লাখ নগদ টাকা, শিশুখাদ্য কিনতে ৩১ লাখ টাকা, গোখাদ্য কিনতে ২৮ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে।
সিভিল সার্জনদের নেতেৃত্বে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় ওষুধসহ ওইসব টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ গেলে বিকল্প ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতি ও করণীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব ও সিনিয়র সচিব এবং উপকূলীয় জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে অনলাইনে সভা করেন।