বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on নভেম্বর ২৮, ২০২৪ by

আমি মাথা নোয়াতে শিখিনি : শ্রীলেখা

আরজি করকাণ্ডে সরকারের বিরোধিতা করেছি বলে কাজ না দেওয়ার নির্দেশ এসেছে উপরমহল থেকে অভিযোগ করে এক সাক্ষাৎকারে জানান টালিউড অভিনেতা শ্রীলেখা মিত্র। তিনি বলেন, আরজি করকা-ে একটু বেশিই জোরালো প্রতিবাদ করেছি। অবশেষে তার ফল পেলাম। দুই-দুটা বিজ্ঞাপনের কাজ হাতছাড়া হয়ে গেল। দুটা কাজ থেকেই ভালো অঙ্কের পারিশ্রমিক পেতাম। ক্লায়েন্ট যোগাযোগ করেছিলেন এজেন্সির সঙ্গে। এজেন্সির যিনি প্রতিনিধি তিনি আমাকে পছন্দ করেন। চেয়েছিলেন কাজটা আমিই করি। কিন্তু ওর তো কোথাও না কোথাও বাধা রয়েছে। উনি বললেন—দিদি আরজি করকা-ে তোমার বক্তব্য তোমার বিরুদ্ধে গেছে। তুমি সরকারের বিরোধিতা করেছ। তোমাকে দিয়ে কাজ না করানোর নির্দেশ এসেছে। শ্রীলেখা বলেন, ছবি হাতছাড়া হচ্ছে প্রায়শই। রিয়্যালিটি শো থেকে বাদ পড়ছি। বিজ্ঞাপনী ছবির জন্য নির্বাচিত হয়েও শেষে আর কাজ হলো না। অভিযোগের তালিকা অনেক লম্বা। কিছু জানিয়েছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেক কিছুই জানাইনি। জানিয়ে লাভ নেই, তাই জানাইনি। তিনি বলেন, কিন্তু আবারও আমি সরব। আরজি করকা- নিয়ে অনেকের অনেক বক্তব্য। প্রায় রোজই কেউ কিছু না কিছু বলছেন। আমি একটু বেশিই জোরালো প্রতিবাদ করেছি। অবশেষে তার ফল পেলাম। দু-দুটা বিজ্ঞাপনের কাজ হাতছাড়া হয়ে গেল। তিনি আরও বলেন, আমি আর এ ধরনের ঘটনায় বিচলিত হই না। কোনো কালেই মধু মাখিয়ে কথা বলতে পারি না। বাকিরা যতটা না মনের গভীর থেকে মৃতা চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছেন, আমার চাওয়া ছিল আরও গভীর। আমার বক্তব্য ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। বাংলায় এই দুই পদেই মুখ্যমন্ত্রী আসীন। তাহলে কাকে বলব? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই মুখ খুলতে হবে। সেটিই করেছি। এ অভিনেত্রী বলেন, ভয় না পাওয়ার আরও একটা কারণ— আমার মাথার ওপরে কোনো দায় নেই। ঋণের বোঝা নেই। প্রচুর চাহিদা নেই। দামি গাড়ি, দামি বাড়ি, দামি পোশাকের বিলাসিতা নেই। ফলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজনও নেই। একইভাবে যতটা সম্ভব সৎ থেকে কাজ করা যায় ততটাই সৎ আমি। তিনি বলেন, একমাত্র দেয়ালে পিঠ ঠেকে না গেলে মিথ্যে কথা বলি না। বললেও এমন মিথ্যে বলি না যা অপরের ক্ষতি করবে। বরাবর নিজের কাজ নিজেই জোগাড় করে এসেছি। কোনো দিন তথাকথিত ‘সুগার ড্যাডি’ নেই। ভালোবাসার মানুষজনেরও বড়ই অভাব। সব মিলিয়ে নিজেই নিজের হর্তা-কর্তা-বিধাতা। ফলে যা-ই ঘটুক ঠিক চালিয়ে নেব। শ্রীলেখা বলেন, আজ আমি পরিচালক হলে এমন অভিনেতা বাছাই করতাম, যিনি আক্ষরিক অর্থেই সৎ ব্যক্তি। তা হলেই আমার বিজ্ঞাপন বেশি বিশ্বাসযোগ্য হতো। কারণ জনতা সেই বিশ্বাসযোগ্য মুখ দেখে জিনিস কেনার ভরসা পেত। আমার মতো করে তো সবাই ভাববেন না। অনেকে বলেন— এত বিতর্ক, এত বিরোধিতা যখন, তখন একটু কম কথা বললেই তো হয়। তিনি বলেন, আমি বলেছি— আমি পারব না। এই বয়সে এসে নিজেকে বদলানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া মাথা নোয়াতে শিখিনি। তাই আমার মতো করেই চলব। এককালে খুব কম উপার্জন করিনি। সেগুলো উড়িয়ে নষ্ট করিনি। আমার চলে যাবে। বরং এ ধরনের ঘটনা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। বুঝতে পারি— আমিই সঠিক। ঠিক পথে হাঁটছি বলেই আমাকে ঘিরে এত কথা।

About The Author

শেয়ার করুন