Last Updated on নভেম্বর ২১, ২০২৪ by
আমার অগ্রাধিকার থাকবে পড়াশোনার উন্নয়নে : নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের নতুন অধ্যক্ষ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন প্রফেসর মহা. তৌহিদুল ইসলাম। তিনি গত ১৯ নভেম্বর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ঐতিহ্যবাহী কলেজটির শিক্ষার মানোন্নয়নে তিনি কাজ শুরু করেছেন।
বৃহস্পতিবার কথা হয় নতুন এই অধ্যক্ষের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এই কলেজে অধ্যায়ন করছেন। ৫৩ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন এবং ৩৫ টি পদ শূন্য আছে। এত বেশি ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক স্বল্পতার মধ্যে এই কলেজের শিক্ষার মান কীভাবে এগিয়ে নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ মহা. তৌহিদুল ইসলাম বলেন “আমার প্রথম প্রাইয়োরিটি হবে অ্যাকাডেমিক ডেভেলপমেন্ট। অর্থাৎ পড়াশোনার উন্নয়ন করা। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে ঠিকমতো ক্লাসে আসে তার জন্য যা কিছু করা দরকার তাই করা হবে। এজন্য আমি সকল স্টাফকে নিয়ে উপায় বের করব, কেউ যদি ক্লাসে না আসে তাহলে তাকে কীভাবে ক্লাসে আনা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিব।”
অধ্যক্ষ বলেন-“আমি যোগদান করার পর যতটুকু বুঝেছি তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে আমাদের শিক্ষক স্বল্পতা থাকলেও যেসব শিক্ষক আছেন তারা অত্যন্ত আন্তরিক। আমি তাদের নিয়ে টিম ওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে অ্যাকাডেমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে পারব ইনশাআল্লাহ।”
তিনি বলেন, আমি কো-কারিকুলামের দিকেও নজর দিব। আমি ইতোমধ্যে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক কার্যক্রম চালিয়ে যাবার জন আমাদের বিএনসিসি রোভার, স্কাউট, রেড ক্রিসেন্টসহ সচল করার উদ্যোগ নিয়েছি। তবে সবার আগে আমি অ্যাকাডেমিক ডেভেলপমেন্ট করতে চাই। শুধু এইচএসসি বা অনার্স নয়-সকল শিক্ষার মানান্নোয়ন হবে ইনশাআল্লাহ।
মহা. তৌহিদুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বেগমনগর গ্রামে ১৯৬৭ সালের ১২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বৃত্তিসহ প্রাথমি শিক্ষা সমাপ্ত করেন।
এরপর তিনি নয়াদিয়াড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণী পর্য়ন্ত লেখা পড়া করেন এবং গোমস্তাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৯ম ও ১০ম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে ১৯৮২ সালে এসএসসি পাস করেন। এরপর তিনি রহনপুর ইউসুফ আলী কলেজ থেকে ১৯৮৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। মহা. তৌহিদুল ইসলাম এইচএসসি পাস করার পর রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে ইংরেজিতে অনার্স ও ৮৮ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ১৪তম বিসিএস এর শিক্ষা ক্যাডার হিসেবে ১৯৯৩ সালের ১৬ নভেম্বর নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষতা জীবন শুরু করেন। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে কর্মজীবনে তিনি বৃটিশ সরকারের স্কলারশিপে ১৯৯৯ সালে ইংলিশ ল্যাগুয়েজ টিচিং বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব সেন্টমার্ক অ্যান্ড সেন্টজন প্লি মাউথ-এ ৩ মাসের একটি কোর্স সম্পন্ন করেন। এই কোর্স সম্পন্ন হবার পর তাঁকে রাজশাহী টিটি কলেজে ইএলটি প্রকল্পের অধীনে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে তিনি সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়ে আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজে যোগদান করেন। এরপর ২০০৭ সালে তাঁকে রাজশাহী কলেজে বদলি করা হয়। ২০০৯ সালে তাঁকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিয়ে পাবনায় এডুয়ার্ড কলেজে বদলি করা হয়। পরে ২০১০ সালে তিনি রাজশাহী কলেজে বিদেশী ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর দায়িত্ব পালন করেন। যুক্ত রাজ্যের কেমব্রিজে অ্যাংলিয়া রাসকিন ইউনিভার্সিটিতে একটি কোর্স সম্পন্ন করেন তিনি।
এরপর তাঁকে ২০১১ সালে রাজশাহী কলেজে ইংরেজি বিভাগে বদলি করা হয়। পরে ২০১৬ সালে প্রফেসর পদে পদোন্নতি দিয়ে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান করে রাজশাহী কলেজ থেকে বদলি করা হয়। পরে গত ১৪ নভেম্বর নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়। গত ১৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, সরকারি কলেজ-২ শাখার উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে পদায়নের এই তথ্য জানা যায়।
নবাগত অধ্যক্ষ মহা. তৌহিদুল ইসলাম দুই পুত্র সন্তানের জনক। দুইপুত্রই প্রকৌশলী এবং স্ত্রী একজন গৃহিনী। তিনি ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, চাইনা ও মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া তিনি ২০২২ সালে পবিত্র হজব্রত পালন করেন।