দৈনিক গৌড় বাংলা

আমরা কখনও হাল ছাড়ি না : ভিনিসিউস

প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখাকে রীতিমত অভ্যাসে পরিণত করেছে রেয়াল মাদ্রিদ। খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এখন দলটির জন্য নিয়মিত ঘটনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সেরকমই এক অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে তারা। বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পর দলটির তারকা ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস বললেন, তাদের এমন সাফল্যের মন্ত্র একটাই, কখনো হাল না ছাড়া। ইউরোপ সেরার মঞ্চে বুধবার শেষ চারের দ্বিতীয় লেগে বায়ার্নকে ২-১ গোলে হারায় রেয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলের অগ্রগামিতায় ফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা। দুই দলের প্রথম লেগ হয়েছিল ২-২ ড্র। অথচ আলফুঁস ডেভিসের দুর্দান্ত গোলে ৮৭ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল বায়ার্ন। ওয়েম্বলির ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া থেকে ¯্রফে কয়েক মিনিট দূরে ছিল জার্মান দলটি। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন রেয়াল তখন তো শেষের আগে শেষ বলে কিছু নেই। হয়েছেও তাই! গত কয়েক মৌসুমে প্রত্যাবর্তনের অসাধারণ সব গল্প রচনা করা রেয়াল চার মিনিটে দুই গোল করে মুঠোয় নেয় ম্যাচের লাগাম।

হারের দুয়ার থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের আরেকটি ধ্রুপদি অধ্যায়ের জন্ম দেয় ইউরোপের সফলতম ক্লাবটি। ৮৮ ও ৯১ মিনিটে গোল দুটি করেন হোসেলু। ম্যাচটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেন ভিনিসিউস। প্রতিপক্ষের রক্ষণে বেশ কয়েক বার ভীতি ছড়ান তিনি। তার একটি শট তো গোলবারে লেগে ফিরে আসে। আরেকটি দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন বায়ার্ন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার। হোসেলুর প্রথম গোলেও ছিল ভিনিসিউসের অবদান। ব্রাজিলিয়ান এই উইঙ্গারের শটেই বল ঠিকমতো ধরে রাখতে পারেননি নয়ার। তার হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়া বল জালে পাঠান হোসেলু। তবে ম্যাচ শেষে মুভিস্টার প্লাসকে ভিনিসিউস বলেন, দলগত প্রচেষ্টায়ই এতটা সফল রেয়াল। “যখন ঘরের মাঠে খেলি, তখন মনে হয় আমরা যেকোনো কিছু করতে পারি। পুরোটাই দলের ঐক্যের কারণে হয়েছে, এটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।” “সবাই যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা অসাধারণ। আমাকে যদি রক্ষণে নামতে হয়, বেলিংহ্যাম বা রদ্রিগোর মতো কোনো অভিযোগ ছাড়াই এটা করব। আমরা সবাই একটি লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দল। সবসময়ই এটা।” রেকর্ড ১৫তম শিরোপা ঘরে তোলার লক্ষ্যে ফাইনালে আরেক জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হবে রেয়াল।

সবশেষ তারা ইউরোপ সেরার মুকুট জিতেছিল ২০২২ সালে। সেবার লিভারপুলের বিপক্ষে ফাইনালে একমাত্র গোলটি করেছিলেন ভিনিসিউস। দারুণ ছন্দে থাকা ২৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড বললেন, শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াই তাদের মূল মন্ত্র। রেয়ালের অংশ হতে পেরে নিজেকে বেশ ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। “আমি খুবই গর্বিত। এই স্টেডিয়ামে এতবার খেলতে পেরে, এমন রাতের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরে এবং আরও একবার এমন কিছু করতে পেরে আমি গর্বিত। এটাই রেয়াল মাদ্রিদৃ আমরা কখনোই হাল ছাড়ি না। আর আমাদের সমর্থকরাও আমাদের মতোই, সবসময়ই আস্থা রাখে। এখন আরও কিছু অর্জনের লক্ষ্যে এগোতে হবে।” “আমি ভাগ্যবান যে এই জার্সি পরতে পারছি, এটা স্বপ্নের মতো। ব্রাজিলের একটি ছোটখাটো জায়গা থেকে এসেছি, বিশ্বের অন্য প্রান্ত থেকে যেখানে মানুষ সাধারণত উন্নত জীবনযাপন করে না। ওই জায়গায় জন্ম নিয়ে সফল হওয়া খুবই কঠিন। আর আমি একটি স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। এই ড্রেসিংরুমের অংশ হতে পারাটা অনন্য এক পাওয়া। তাই এই দলের জন্য সবসময় নিজের সবটুকু উজাড় করে দেব।”

About The Author