শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

Last Updated on অক্টোবর ২৭, ২০২৪ by

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ সাবেক মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে (শ্যেন অ্যারেস্ট) আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রবিবার এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন পেশ করেন।
বর্তমানে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা যাদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, গোলাম দস্তগীর গাজী, শাহজাহান খান, দীপু মনি, ফারুক খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক এলাহি, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
এছাড়া আলাদা আরেক আবেদনে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ছয়জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজিরেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদেরকে ২০ নভেম্বর হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (পুরাতন) মূল ভবনের সংস্কার কাজ চলমান থাকায় ভবন সংলগ্ন (অস্থায়ী) ট্রাইব্যুনালে রবিবার বেলা সাড়ে ১২টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকা ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের আবেদন করেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল ১৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেন। প্রসিকিউশন তিনটি আবেদন পেশ করে।
আদালতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সাথে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রসিকিউশন অফিসে ৭৫টির মতো অভিযোগ জমা পড়ে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অভিযোগ জমা পড়ছে।
গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আজ রবিবার তিনটি আবেদন পেশ করেছি। শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল আদেশ দেয়।
তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন কোনোরূপ হয়রানির শিকার না হোন সে বিষয়ে আমরা সচেতন থাকব।

About The Author

শেয়ার করুন