মোহা. জোনাব আলী
গভীর রাত। সারাদিনের কোলাহলময় ব্যস্ততার পর মানুষ ঘুমে আচ্ছন্ন। নিশাচরী প্রাণী ছাড়া সবার জন্যেই এ সময়টা ঘুমের অতল গভীরে নিমজ্জিত থাকার সময়। নিত্যকার আলোর সাথে জীবন সংগ্রাম করে মানুষ রাতের অন্ধকারে শক্ত ও নরম বিছানায় দেহ-মন এলিয়ে দিয়ে ঘুমের সাগরে ডুব দেন বিছানার উপরে। এমন কি অন্য প্রাণীরাও তাদের নিজ ছন্নছাড়া গৃহে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আরামে ঘুমাতে থাকে। কারণ, রাত তো শুধু আরাম-বিরামেরই সময়। তবুও অনেক সময় রাতের অন্ধকারেও নিশাচর প্রাণীর মতো কিছু মানুষও তাদের ছদ্মবেশী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। কেউ চুরি করে, কেউ ডাকাতি করে, কেউবা ব্যভিচারীও করে বেড়ায়। আর এরই টুন-টান, ঢুস-ঢাস, ঠক-ঠাক শব্দে হয়তো অনেক ঘুমন্ত মানুষের ঘুমও ভেঙ্গে যায়। তখন তারাও নিশাচরী প্রাণীর মতো নিজেকে প্রতিরোধ-প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে বাধ্য হয়ে পড়েন।
এ গভীর রাতে পাশের গ্রাম থেকে মানুষের অস্পষ্ট চিৎকার ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। রাতের মুক্ত বাতাসে ভেসে আসা শব্দের ধ্বনিগুলো একবার মনে হচ্ছে, আর্তচিৎকারের আবার ক্রন্দনের। কখনো মনে হচ্ছে বাঁচাও বাঁচাও বলে আত্মরক্ষার চিৎকার, কখনোবা শুধু কান্নারই সুর। শ্রবণ তন্ত্রে এ শব্দ পৌঁছলেও তার মর্মার্থ বোঝা যাচ্ছে না। তবু আলমগীর সে সব অস্পষ্ট শব্দের মূল অর্থ উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। প্রথম শব্দেই তিনি জেগে উঠেন এবং বিছানায় বসে বসে ক্ষণিক দিক নির্ণয় করেন। শেষে ঘরের দরজা খুলে আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করতে থাকেন। তার বুঝতে দেরি হয় না যে, এটা কিসের শব্দ?
স্ত্রী বিলকিশকে ডাক দেন। বিলকিশ তার বিছানা ছাড়ার সময়ই জেনেছিল ও বাইরে গেল। কি জন্যে গেল তাও তার জানা বিষয়। আলমগীর বলেন, ‘বিলকিশ, তাড়াতাড়ি আমার লাইট আর ডান্ডাটা দাও।’ দেরি না করেই বিলকিশ তার স্বামীর আত্মরক্ষার এ মূল সম্বল দু’টো বের করে দেন। আলমগীর মুহূর্তেই সদর দরজা খুলে ছুটে যান গোলমাল হওয়া শব্দ তরঙ্গের পথ ধরে সামনের দিকে।
১৫ বছর আগে আলমগীরের সাথে বিলকিশের বিয়ে হয়। এক যুগাধিক জীবনে বিলকিশ আলমগীরকে সবদিক দিয়েই চিনে ফেলেছেন। আলমগীর একজেদী, প্রচ- সত্যবাদী, নীতির কাছে দুর্দান্ত, চৈতন্যবাদী। উনি যা বোঝেন, বিলকিশ তার বিপরীত বোঝাতে কোনোদিনও পারেননি। তাইতো বিলকিশ জানেন আলমগীরকে কোনো দিন কোনো বিপজ্জনক কাজ থেকেও পেছনে সরানো যায়নি, যাবেও না। যেখানে যে ধরনেরই গোলমাল হোক না কেন, ও সেখানে পৌঁছবেই, এগোবেই। মানুষের কোনো বিপদে উনি দুরে থাকতে পারেন না। শুধু মানুষই নয়, গৃহপালিত জীব-জন্তুর প্রতিও ওর একই দরদ।
মানুষের বিপদে সাহায্য করা তার মতে একটি মহৎ কাজ। আলমগীরের বিশ্বাস, যে মানুষ অন্য মানুষের উপকার করেন, আল্লাহ তার সহায় হন। আর যার দেহে শক্তি আছে, মনে মনোবল আছে, আত্মায় বিশ্বাস আছে, তারই উচিৎ অন্য মানুষের উপকার করা। এ জন্যেই কারো বিপদের কথা শুনলেই তিনি আর স্থির থাকতে পারেন না। ছুটে যান বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করার জন্যে।
সেই নীতির আদর্শ ধরেই উল্কার গতিতে লাইট ও ডা-া হাতে নিয়ে ছুটে যান আলমগীর। যতই এগিয়ে যান ততই গোলমালের শব্দটা স্পষ্ট হতে থাকে। তার নিশ্চিত অনুমান, ও গ্রামে ডাকাত পড়েছে। তাই ‘ধর ধর’, ‘সবাই দৌড়াও’, ‘আমি আসছি’ ইত্যাদি চিৎকার করতে থাকেন আর ছুটে যান গোলমাল হওয়া শব্দের দিকে।
আলমগীর বরেন্দ্র এলাকার একটি ইউনিয়নের আনসার ভিডিপির ইউনিয়ন দলপতি। ১২-১৩ বছর ধরে তিনি এ পদে আছেন। এ পদ তাকে সম্মান দিয়েছে কিন্তু দেয়নি অর্থনৈতিক মুক্তি। কারণ, আনসার / ভিডিপির কর্মচারীদের সরকারি অনুমোদন আছে, পৃষ্ঠপোষকতা আছে, কিন্তু সংসার পরিচালনার মতো বেতন নেই। মাঝে মধ্যে অস্থায়ী দায়িত্ব দেয়া হয়, তাতে থেকে কিছু করে আয় আসে মাত্র। এতে তার সংসার চলত না। তাই অন্য ব্যবসাও শুরু করেন। কিছু সম্পদ বিক্রি করে একটি দোকান দেন গ্রামের মোড়ে। কিছুদিন ভালোই চলে। কিন্তু পরের উপকার করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের ব্যবসাটাও নষ্ট করে ফেলেন। আবারও চেষ্টা করছেন কিছু একটা করার জন্যে। কিন্তু নাগাল পাচ্ছেন না। অল্প পুঁজিতে তো কোনো ব্যবসাও নেই। তারই বা কি দোষ? ভাগ্যিস, গত বছর থেকে ২ বিঘে জমি বর্গাচাষ নিয়েছিলেন। নইলে এ বছর না খেয়েই মরতে হতো।
আলমগীরের ইউনিয়ন দলপতি হবার পেছনে কারণ আছে, কৃতিত্ব আছে। একদিন বিশেষ কাজ সেরে শহর থেকে ফিরছিলেন। পথের মাঝে দেখেন গোলমাল। লোকজনকে জিজ্ঞেস করেন, ‘কি হয়েছে?’ তারা বলেন যে, ক’জন যুবক মিলে তাদের গ্রামের এক কিশোরীকে ধরে নিয়ে গেল। একথা শোনা মাত্রই তার মাথায় বাজ পড়ে গেল। তিনি বললেন- ‘আপনারা এতগুলো মানুষ তা চেয়ে চেয়ে দেখলেন, কিছুই করতে পারলেন না?’ সবার একই জবাব- যুবকদের হাতে অস্ত্র আছে। তাই কারো সাহস হয়নি তাদের কাছে এগোতে।
আর কিছু না বলে তিনি ছুটলেন। ওদিকে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষেরা তাকে নিষেধ করলেও তিনি শুনলেন না। বরং বললেন- ‘আপনাদের মতো কাপুরুষ আমি নই।’ তার এ সাহস দেখে গ্রামের মানুষেরাও অবশেষে তার পিছু পিছু চলতে থাকেন। তবে কেউ দৌড়ে এগোবার সাহস পাচ্ছেন না। লম্বা এবং দ্রুত পায়ে দৌড়ে গিয়ে বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েন আলমগীর ছিনতাইকারী, অপহরণকারী যুবকদের ওপর। দু’তিনজনকে এমনভাবে কিল, লাথি মারেন যে, অস্ত্র থেকেও তারা ভয়ে পালাতে বাধ্য হয়। আর দু’জনকে হাতে অস্ত্রসহ ধরে ফেলেন এবং দু’পা দিয়ে পর্যায়ক্রমে লাথি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে যুবকরা আলমগীরকে ‘বাপু’ বলে সম্বোধন করতে শুরু করে এবং তাদের ছেড়ে দেবার জন্যে বিনীত অনুরোধ করতে থাকে। কিন্তু অপরাধীকে ক্ষমা করতে জানেন না আলমগীর। কেউ কোনোদিন পাইওনি। তাই দু’হাতে দু’জনকে ধরে নিয়ে গ্রামের দিকে এগোতে থাকেন।
মুহূর্তের মধ্যেই তার বীরত্বের কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, পত্র-পত্রিকায় তার নাম পর্যন্ত উঠে যায়। তাই প্রশাসনও তাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ব্যবস্থা করে। আর করবেই না কেন? যে কিশোরীটিকে তিনি উদ্ধার করেছেন, সে এক আনসার / ভিডিপি সদস্যের কন্যা। ফলে, ধৃত ছেলে দু’টির উপযুক্ত শাস্তির জন্যে জেলা অ্যাডজুটেন্ট নিজেই জেলা প্রশাসনকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। এ কারণেই আলমগীরের পরিচিতি বেড়ে যায়।
এরপরই জেলা অ্যাডজুটেন্ট আলমগীরকে আনসার / ভিডিপি’র সদস্য করেন এবং তার প্রয়োজনীয় ট্রেনিং শেষে তাকে ইউনিয়ন দলপতির দায়িত্ব দেন। এ দায়িত্ব পাবার পর আলমগীর তার এলাকা থেকে অন্যায় অপরাধের মূলোৎপাটন করে ফেলেন। স্থানীয় কেউ তার নাম শুনলে আর অপরাধের কাজে এগোতে সাহস পায় না। সে থেকেই তিনি ইউনিয়ন দলপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি দায়িত্ব পালন করাতে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত চৌকিদার-দফাদারদেরও অনেকটা স্বস্তি মিলেছে।
বিলকিশ ঘরের হারিকেনটা মিটমিট করে জ্বেলে রেখে দূরে থেকে ভেসে আসা গোলমাল শোনে আর স্বামীর প্রতীক্ষায় প্রহর গোনেন। এরই ফাঁকে ছেলেমেয়ে ৩ জনকেই বিছানা থেকে তুলে হিসি করিয়ে নেন। হিসি করে শিশুরা আবার ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু বিলকিশের আর ঘুম আসে না। স্বামীকে নিয়ে ওর বড় চিন্তে। ও যা একরোখা, কোনো কথা-ই শুনতে চান না। কখন যে কি কা- করে বসে। তাই কথায় কথায় একদিন বিলকিশ বলেছেন, ‘আচ্ছা, তুমি যে চোর, বাটপার, ডাকাতদের বিরুদ্ধে এত করে বেড়াচ্ছ, ওরা যদি কোনোদিন তোমাকে মেরে ফেলে?’ এ কথা শুনে হাসতে হাসতে আলমগীর জবাব দিয়েছেন, ‘ভালো মানুষদের মার খেয়ে, যন্ত্রণা সয়েই বেঁচে থাকতে হয়। আর মরলে তো তার নামটা স্বর্ণাক্ষরেই লেখা হবে। জানো না, দেশকে ভালোবেসে যারা মরেছেন, তারা সবাই মরেও অমর হয়েছেন।’
বিলকিশ বলেন, ‘তোমার কথা শুনে আমার খুব ভয় হয়। কখন যে কি করে বসো।’ সাথে সাথেই উত্তর দেন আলমগীর, ‘আমি মরে গেলে সে মৃত্যু হবে সাফল্যের, গৌরবের। কারণ, আমি মরলে অন্যায় প্রতিরোধ করতে গিয়েই মরব। দেশকে ভালোবেসেই মরব এছাড়া আমার …।
আলমগীরের কথায় কাঁদতে পারেন না বিলকিশ। কিন্তু চোখের কোণে অশ্রু জমে, মানসিক শঙ্কার সে অশ্রুকে বাঁধ মানানো যায় না। তাই ধরা গলায় বলেন, ‘কিন্তু আমাদের অবস্থা কি হবে? ছেলেমেয়ে নিয়ে আমি কি করব?’ আলমগীর বলেন, ‘ধ্যাৎ কি যে বলো, মরণ কি অত সহজ যে, বললেই হয়ে গেল।’ বিলকিশের মনে আশঙ্কা তবু কাটে না। আলমগীর বিলকিশকে সান্ত¡না দিয়ে বলেন, ‘ওটা ভাগ্যের ব্যাপার। পৃথিবীতে কত মানুষই তো জন্মগ্রহণ করে, যাদের কোনো অবলম্বন থাকে না। তারা কিভাবে বাঁচে? পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীরাও হৃষ্টপুষ্ট হয়ে বেঁচে থাকতে পারে কার জন্যে? ঐ যে, মহান আল্লাহ একজন আছেন তিনি সবার রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করে দেন, এজন্যেই। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখলে আল্লাহ সবাইকে কাজের সন্ধান ও রুজির ব্যবস্থা দেন। এছাড়া আজকাল তো সবক্ষেত্রেই মেয়েদের অগ্রাধিকার চলছে। তুমি না হয় কোনো একটা চাকরি নিবে। এখন হাজার হাজার মেয়ে নিজেও নিজের সংসারের কর্ণধার হয়েছে। আমার বিশ্বাস তুমিও পারবে।’
আলমগীরের একথা শোনার পর থেকেই বিলকিশের মনে অজানা আশঙ্কা সবসময়ই তোলপাড় তোলে। কারণ ভালো মানুষের কথা অনেক সময় সত্যও হয়ে যায়। আর ও যা একঘেঁয়ে, হয়তো কখন সত্যিই কোনো অঘটন ঘটে যেতে পারে। এমন ভয় মন থেকে কখনো বিলকিশ মুছে ফেলতে পারেন না।
এদিকে রাত গড়তেই থাকে। আলমগীর ফিরে আসেন না। বিলকিশ ঘরে গিয়ে আলমগীরের পুরস্কার পাওয়া দেয়ালঘড়িটার দিকে দেখেন, রাত ৩টা পার হয়ে যায়। ততক্ষণে গোলমালটাও অনেক কমে গেছে। শুধু অস্পষ্ট কিছু গুঞ্জনের সুর ভেসে আসছে। বিলকিশ আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। ঘরে গিয়ে বিছানায় বসে দেয়ালে গা এলিয়ে দেন। আলমগীরের একটি কৃতিত্বের কারণে পাওয়া দেয়ালঘড়িটার দিকে তাকিয়েই থাকেন বিলকিশ।
এ ঘড়িটারও বিশেষ কাহিনী আছে। যা ভাবলে শরীর শিউরে ওঠে। ভাবতে ভাবতে তার চোখের পাতা দু’টো জোড়া লেগে আসতে থাকে- ভেবে আর কি হবে? হয়তো সঙ্গী-সাথীদের সাথে গল্পগুজবে মেতে গেছে। এরকম ও তো প্রায়ই করে। এমনিভাবে চেতনার তন্ত্রীতে ঘুমের পাথর বসতে থাকে বিলকিশের চোখে।
মনটা কেবল ঘুমপরীদের দেশে গেছে, এমনি সময়ে বাড়ির বাইরে কাদের ডাক শুনতে পান। ‘ভাবী’, ‘ভাবী’ বলে তারা ডেকে যাচ্ছেন। বিলকিশ উঠে গিয়ে বাইরের দরজা খুলে দেন। আলমগীরের এক সহযোগী রশিদ হাঁপাতে হাঁপাতে বলেন- ‘আলমগীর ভাইকে ডাকাতে গুলি করেছে। আপনি তাড়াতাড়ি আসুন। সবাই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে।’ বিলকিশ পাথর হয়ে যান। মুখ দিয়ে কোনো কথা বেরোয় না। ততক্ষণে সকালের লাল সূর্যের আলো চারিদিকে জোনাক করতে শুরু করেছে। ছেলেমেয়েরাও জেগে উঠেছে। সবাই মিলে ছুটতে থাকে।
পাশের গ্রামের এক ধনাঢ্য ব্যক্তি আশরাফ সাহেবের বাড়িতে ডাকাতি পড়ে। বাড়ির লোকজন জেনে গিয়ে চিৎকার শুরু করলে চারদিক থেকে মানুষ ছুটে আসতে থাকেন। চারদিক থেকে ডাকাতদের ঘিরে ফেলেন। ডাকাতরা এলোপাথাড়ি গুলি করে পালানোর পথ খোঁজে। আলমগীর যে পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন সেই পথেই ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করছিল, আলমগীর এক ডাকাতকে ধরে ফেলেন। সাথে সাথে অন্য ডাকাতরা গুলি চালায়। তার ডান দিকের পেট দিয়ে গুলি ভেতরে ঢোকে। তবু ডাকাতকে ছাড়েননি আলমগীর। দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে থাকেন। ডাকাতরা চেষ্টা করেও ছাড়াতে পারেনি। শেষে অন্যরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করে।
ধৃত ডাকাতকে নিয়ে আলমগীর মাটিতে পড়ে যান। তার অবশ হাত দুটো ডাকাতকে শক্ত করে ধরে আছে। দেহের প্রাণপাখি ততক্ষণে বেরিয়ে গেছে। জীবন দিয়েছেন আলমগীর, কিন্তু ডাকাত ছাড়েননি। বিলকিশ বাক হারিয়ে ফেলেন। আলমগীরের শরীরে মাথা রেখে কাঁদতে থাকেন আর তার মনে বলতে থাকে, ‘ওগো এমন বীরত্ব দেখিয়ে তুমি যা বলতে, শেষে তাই করে গেলে।’ তার এবং ছেলেমেয়েদের কথায় ও কান্নায় আশপাশের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। আর কারো মুখে কোনো ভাষা ফোটে না। শুধু সবার চোখের কোণে বেদনার অশ্রু টলমল করতে থাকে। (সংক্ষেপিত)
প্রভাষক : বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপটেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজ, স্বরূপনগর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ