আইপিএল ও বিশ্বকাপ নিয়ে যা বললেন ট্রাভিস হেড
মারকাটারি ব্যাটসম্যান হিসেবে আগে থেকেই পরিচিতি ছিল ট্রাভিস হেডের। গত এক-দেড় বছরে স্মরণীয় কিছু ইনিংস তিনি খেলেছেন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে। তবে এবারের আইপিএলে যেন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে নিজেকে নতুন উচ্চতায় তুলে নিয়েছেন তিনি। ব্যাটিং তা-ব দিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান আলোড়ন তুলেছেন ক্রিকেট বিশ্বে। তবে এটিও তিনি মনে করিয়ে দিলেন, আইপিএলে ঝড় তোলা মানেই বিশ্ব আসরে দারুণ কিছু করার নিশ্চয়তা নয়। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ম্যাচ জেতানো সেই সেঞ্চুরির পর হেডকে নিয়ে ভারতে বাড়তি একটা আগ্রহ ছিলই। তা তিনি আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন এবারের আইপিএলে। এখনও পর্যন্ত ১১ ইনিংসে ৫৩৩ রান করে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান স্কোরার তিনি। রান সংখ্যার চেয়েও চমকপ্রদ তার রান করার ধরন। রানের দিক থেকে তার ওপরে থাকা দুই ব্যাটসম্যান ভিরাট কোহলি (৫৪২) ও রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের (৫৪১) স্ট্রাইক রেট দেড়শর নিচে। হেডের স্ট্রাইক রেট সেখানে ২০১.৮৯! লাক্ষ্নৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে বুধবার তিনি খেলেন ৩০ বলে ৮৯ রানের টর্নেডো ইনিংস।
সব মিলিয়ে সামনের টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপেও তার কাছে বড় কিছুর আশায় থাকবে অস্ট্রেলিয়া। তবে সেই প্রত্যাশার ক্ষেত্রেই সতর্কতা জানিয়ে রাখলেন হেড। বিশ্বকাপে উইকেটও যে ভিন্ন থাকবে, মনে করিয়ে দিলেন তিনি। “যখনই আমরা খেলি, সবসময়ই চাওয়া থাকে, যতটা সম্ভব ধারাবাহিক যেন হতে পারি। রান যেন করতে পারি। ভালো খেলতে পেরে তাই ভালো লাগছে। তবে এর মানে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজেও ভালো করব, সেই নিশ্চয়তা নেই।” “আমার মনে হয়, ক্যারিবিয়ানে বেশ ভালোই স্পিনের মুখোমুখি হতে হবে আমাদের এবং টুর্নামেন্ট যত এগোবে, উইকেট ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠবে।” স্পিনের বিপক্ষেও মারমুখি ব্যাটিংয়ের অনুশীলন অবশ্য তিনি চালিয়ে যাচ্ছে আইপিএলে। ৩০ বছর বয়সী বাঁহাতি জানালেন, এখনও পর্যন্ত তা কাজে লাগছে ভালোভাবে। “আমি খুবই সন্তুষ্ট যে আজকে স্পিন বেশ ভালো খেলেছি এবং অনুশীলনে যেসব কাজ করছি, এখনও পর্যন্ত তা কাজে দিচ্ছে। তবে চাপ নিচ্ছি না। গত দুই বছর ধরে যেমন করছি, তেমনই ফুরফুর থাকার চেষ্টা করছি এবং মাঠে নামতে মুখিয়ে আছি।”
স্ট্রাইক রেটের দিক থেকে অবশ্য হেডের চেয়েও এগিয়ে আছেন তার উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী আভিষেক শার্মা। তরুণ এই ভারতীয় ব্যাটসম্যান ৪০১ রান করেছেন ২০৫.৬৪ স্ট্রাইক রেটে। বুধবার হেডের সঙ্গে তা-ব চালিয়ে তিনি করেছেন ২৮ বলে ৭৫ রান। ১৬৬ রান তাড়ায় একগাদা রেকর্ড গড়ে দুজন মিলে ম্যাচ শেষ করে দিয়েছেন অবিশ্বাস্যভাবে ৯.৪ ওভারেই। দুজনের এমন ব্যাটিংয়ে কোনো জবাব যেমন মাঠে খুঁজে পাননি লোকেশ রাহুল, ম্যাচ শেষেও কোনো জবাব ছিল না লাক্ষ্নৌ অধিনায়কের কণ্ঠে। “সত্যি বলতে, ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। টিভিতে ওদের এই ধরনের ব্যাটিং আমরা দেখেছি, কিন্তু আজকে অবিশ্বাস্য ছিল। সবকিছুই মাঝব্যাটে লাগছিল। ওদের স্কিলের প্রতি কুর্নিশ। ছক্কা মারা নিয়ে অনেক কাজ করেছে ওরা। উইেট আচরণ বোঝার সুযোগই দেয়নি ওরা।”