অ্যাপল-গুগল জোটের কনট্যাক্ট ট্রেসিং প্রযুক্তি নির্ভর করোনাভাইরাস ট্রেসিং অ্যাপ নিয়ে এসেছে সুইজারল্যান্ড। গোটা বিশ্বে অ্যাপল গুগল জোটের প্রযুক্তি ব্যবহার করে অ্যাপ আনার তালিকায় সুইজারল্যান্ড-ই প্রথম।
দেশটির সুইস আর্মি সদস্য, হাসপাতাল কর্মী এবং সরকারি কর্মীরা এখন ‘সুইসকোভিড’ ইনস্টল করতে পারছেন। সামনে আরও বড় পরিসরে অ্যাপটি ছাড়ার পরিকল্পনা করেছে দেশটি। এদিকে, লাটভিয়ান এক জোট-ও খুব শীঘ্রই একই প্রযুক্তি নির্ভর অ্যাপ উন্মোচন করতে যাচ্ছে। — খবর বিবিসি’র।
প্রযুক্তি ব্যবহারে নিয়ম বেঁধে দেওয়ায় সমালোচনা উঠেছে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান দুটিকে ঘিরে। বিশ্বে বর্তমানে দুই ধরনের কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ তৈরি হচ্ছে, কেন্দ্রমুখী ও কেন্দ্রবিমুখ। কেন্দ্রমুথী প্রক্রিয়ায় অ্যাপ থেকে পাওয়া ডেটা জমা হচ্ছে কেন্দ্রীয় কোনো সার্ভারে, আর কেন্দ্রবিমুখ প্রক্রিয়ায় ডেটা থাকছে ব্যবহারকারীর ফোনেই। গোপনতার দোহাই দিয়ে শুধু কেন্দ্রবিমুখ অ্যাপ নির্মাতা দেশগুলোকে প্রযুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে অ্যাপল-গুগল জোট।
ব্যবহারকারীর অবস্থান ডেটা সংগ্রহের ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি। অ্যাপল-গুগল জোটের প্রযুক্তি বা এপিআই-টি (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেইস) আইওএস বা অ্যান্ড্রয়েডের বিশেষ কিছু ফিচারে প্রবেশাধিকার দেবে।
এ প্রসঙ্গে এক যৌথ চিঠিতে জার্মান, ফরাসী, ইতালিয়ান, স্প্যানিশ এবং পর্তুগিজ সরকারের ‘ডিজিটাল অ্যাফেয়ার্স’ মন্ত্রীরা লিখেছেন, “ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এমনভাবে ডিজাইন করা উচিত যাতে আমরা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার হিসেবে এটিকে মূল্যায়ন করতে পারি এবং ইউরোপীয় মূল্যবোধের হিসেবে নাগরিকদের এটির প্রয়োজন আছে কি না তা বিচার করতে পারি”।
“আমরা বিশ্বাস করি, প্রযুক্তি মানদ-ের মাধ্যমে আমাদের এই অধিকারে চ্যালেঞ্জ জানানো ভুল পদক্ষেপ এবং এতে সরকার ও ব্যক্তিগত খাতের জোট বাঁধার একটি সুযোগ নষ্ট হল”। গুগল ও অ্যাপলকে এই ব্যাপারে মন্তব্য করার আহবান-ও জানানো হয়েছে।
সুইজারল্যান্ড অবশ্য দুই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগকে সাদরে গ্রহণ করেছে। তবে, সাধারণ মানুষের জন্য প্রযুক্তিটি নিয়ে আসতে গেলে প্রথমে বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাব পাশ করতে হবে দেশটির পার্লামেন্টে। দেশটির সরকার আশা করছে মধ্য জুনের মধ্যেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে।
“এত বড় মাপের দূরত্বীকরণ কাজের জন্য তৈরি হয়নি ব্লুটুথ প্রযুক্তি” – বলেছেন ইটিএইচ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সারজান চাপকুন। “এই কাজে এটি ব্যবহারের জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রকৌশল দক্ষতা এবং সহযোগিতার প্রয়োজন, এমনকি অ্যাপল ও গুগলের সহযোগিতাও প্রয়োজন”।
এই অ্যাপের সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর দাবি, প্রায় ৭০ শতাংশ সুইস বাসিন্দা কনট্যাক্ট ট্রেসিং উদ্যোগটির পক্ষে আছেন।
গত সপ্তাহে অ্যাপল-গুগল জোট জানিয়েছিল, ২২টি দেশ এবং বেশ কিছু মার্কিন অঙ্গরাজ্য এপিআইয়ের প্রবেশাধিকার চেয়ে অনুরোধ করেছে।
বৃহস্পতিবার নাগাদ অ্যাপল-গুগল এপিআই সম্বলিত ট্রেসিং অ্যাপ নিয়ে আসবে লাটভিয়া। ওই অ্যাপ আনতে ভোটভুটির প্রয়োজন পড়বে না দেশটির।
সুইজারল্যান্ডের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এরইমধ্যে অ্যাপ স্টোরে অ্যাপটিকে ছাড়ার অনুমোদন দিয়েছে অ্যাপল। “প্রথম হিসেবে আনতে পেরে অবশ্যই আমরা আনন্দিত, কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে আমাদের বাসিন্দাদের ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে সাহায্য করা”।