চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ হাজার পরিবারের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব মানুষের মাঝে সরকারিভাবে ত্রাণ ও নগদ টাকা বিতরণ করছে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত পদ্মা, মহানন্দা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে পানি বাড়ায় চরাঞ্চলের মানুষ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহেদুল আলম জানিয়েছেন, পদ্মা নদীর বিপদসীমা ২২ দশমিক ৫০। গত মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে আজ (গতকাল) বুধবার দুপুর পর্যন্ত পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। পদ্মার পানি বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে মহানন্দা নদীর বিপদসীমা হচ্ছে ২১ মিটার। একই সময়ে এ নদীতে পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। এ নদীটি বর্তমানে ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে পুনর্ভবা নদী বিপদসীমার ৭১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত মঙ্গলবার থেকে ২৪ ঘণ্টায় গড়ে ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। বিপদসীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন। তবে বৃষ্টি না হলে দ্রুত পানি নেমে যাবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান জোয়ার্দার জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুর উপজেলার নি¤œাঞ্চলের বিভিন্ন ইউনিয়নের ১৩ হাজার ৯০৬ পরিবারের ৫৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার নারায়ণপুর, আলাতুলি, চরবাগডাঙ্গা, দেবীনগর, শাহজাহানপুর ও চরঅনুপনগর ইউনিয়নসহ নিম্নাঞ্চলের ৫ হাজার ৫৬৫ পরিবারের ২৪ হাজার ৬২৫ জন; শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, উজিরপুর, দুর্লভপুর, মনাকষা ও ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নসহ নিম্নাঞ্চলের ৮ হাজার ১০০ পরিবারের ৩২ হাজার ৪০০ জন এবং গোমস্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ২৩৮ পরিবারের ৯৮০ জন মানুষ পানিবন্দি হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সদর উপজেলার পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য ৪৯ মেট্রিক টন, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৪৬ মেট্রিক টন এবং গোমস্তাপুর উপজেলায় ৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সদর ও শিবগঞ্জে ১ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে জেলা ও উপজেলার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এসব চাল ও টাকা বিতরণ করছেন।
আমাদের গোমস্তাপুর প্রতিনিধি আল মামুন বিশ্বাস জানান, উপজেলার রাধানগর, রহনপুর, আলিনগর ,বাঙ্গাবাড়ী, বোয়ালিয়া, গোমস্তাপুর ও চৌডালা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল মহানন্দা ও পুনর্ভবা নদীর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া নদী সংলগ্ন অঞ্চল গুলোতে রোপন করা রোপা আমনসহ ৬০০ হেক্টর জমির ফসল ডুবে গেছে।